জগন্নাথপুরের তেলিকোনা গ্রামে সংঘর্ষ, থানায় মামলা দায়ের 

প্রকাশিত: ১:৫৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০২১

জগন্নাথপুরের তেলিকোনা গ্রামে সংঘর্ষ, থানায় মামলা দায়ের 

জগন্নাথপুরের তেলিকোনা গ্রামে সংঘর্ষ, থানায় মামলা দায়ের

 

 

 

 

হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ

 

 

জগন্নাথপুর এর তেলিকোনা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনায় শিশু কন্যা সহ ৩ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত আব্দুল বারিক বাদী হয়ে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর বর্তমান মেম্বার আছাদুল হক(৭০)কে প্রধান আসামী করে ২২ জন এর নাম উল্লেখ পূর্বক জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয় ও মামলা সুত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাধীন কলকলিয়া ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত তেলিকোনা গ্রাম নিবাসী মৃত আজমান উল্লাহর ছেলে সামছুল হক পক্ষ ও একই গ্রাম নিবাসী মৃত সোনা উল্লাহর ছেলে মাতাব আলী পক্ষের লোকজন এর মধ্যে উপজেলার “কামারখালী নদী ১ম খন্ড” উন্মুক্ত জলমহাল হতে টোকন রেন্টের মাধ্যমে মৎস্য আহরণ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য, মামলা-মোকদ্দমা ও বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে গত ৮ ই অক্টোবর রোজ শুক্রবার স্থানীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে সামছুল হক পক্ষের আবুল বশর ও মাতাব আলী পক্ষের রাজন মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয় মেম্বার আছাদুল হক ও মুসল্লীদের মধ্যস্ততায় বিষয়টি নিস্পতি হলেও মাতাব আলী পক্ষের আব্দুল বারিক গং ব্যক্তিবর্গ মসজিদ থেকে নিজ বাড়ী যাওয়ার পথে বেলা প্রায় ২ টা ৩০ মিনিটের সময় জগন্নাথপুর – তেলিকোনা (চন্ডিঢর) সড়ক এর উপর সামছুল হক পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে মাতাব আলী পক্ষের আব্দুল বারিক গং ব্যক্তিবর্গের উপর অতর্কিত হামলা চালালে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৯ জন আহত হয়েছেন। তমধ্যে গুরুতর আহত এই গ্রাম নিবাসী মৃত আরজত আলীর ছেলে আব্দুল বারিক (৪৭), আব্দুল বারিক এর স্ত্রী দল নেহার(৩৫) ও তাদের ত্রিশ মাস বয়সী শিশু কন্যা রোয়াদা বেগম জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যান্য আহতরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এই ঘটনায় আহত আব্দুল বারিক বাদী হয়ে তেলিকোনা গ্রাম নিবাসী মৃত আজমান উল্লাহর ছেলে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর মেম্বার আছাদুল হক (৭০) কে প্রধান আসামী করে ২২ জন এর নাম উল্লেখ পূর্বক ৯ ই অক্টোবর জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে তেলিকোনা গ্রাম ও আশপাশ গ্রামের একাধিক ব্যক্তি তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, কামারখালী নদী ১ম খন্ড উন্মুক্ত জলমহাল টোকন রেন্টের মাধ্যমে মৎস্য আহরণকে কেন্দ্র করে তেলিকোনা গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে হরহামেশা ঝগড়া প্রসাদ লেগেই আছে। গত ৮ অক্টোবর যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আল্লাহ সহায় বড় ধরনের কিছু হয়নি। এই জলমহাল সংক্রান্ত বিষয় প্রশাসনিক ভাবে নিষ্পত্তি করা একান্ত প্রয়োজন। গ্রামে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিধায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী আহত আব্দুল বারিক বলেন, মসজিদ থেকে বাড়ী ফেরার পথে সামছুল হক পক্ষের লোকজন রাস্তার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাকে প্রানে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমার স্ত্রী পুত্র ও আড়াই বছর বয়সী শিশু কন্যা রোয়াদা বেগমকেও মারপিট করেছে । আমাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারীদের আক্রমণ থেকে আমাদের উদ্ধার করেন। আল্লাহর রহমতে ময়মুরুব্বি দোয়ায় বেচে আছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আছাদুল হক মেম্বার এর হুকুমে সাৃছুল হক আমার উপর রামদা দিয়ে আঘাত করেছে আর তার সহযোগীদের এলোপাতাড়ি মারপিঠে আমার স্ত্রী পুত্র ও আড়াই বছর বয়সী কন্যা সহ অনেকে আহত হয়েছেন। আমি দিনমজুর মানুষ প্রশাসনের নিকট সুবিচার প্রার্থনা করছি।

এবিষয়ে মামলার বিবাদী ইউপি মেম্বার আছাদুল হক বলেন, জলমহাল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গ্রামে মতবিরোধ চলছে। বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষে কাজ করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এই সংঘর্ষকালীন সময়ে আমি ও গ্রাম নিবাসী কুদ্দুস ও মোহাম্মদ সহ অনেকেই সালিশ করে সংঘর্ষ থামিয়েছি। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমি সার্বক্ষণিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে । আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

হাবিবা আক্তার জেছি //

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ