করোনাকালে অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ.. শাহাব উদ্দিন শিহাব

প্রকাশিত: ১১:১০ অপরাহ্ণ, মে ৭, ২০২১

করোনাকালে অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ.. শাহাব উদ্দিন শিহাব

দিনরাত ডেস্ক ঃকরোনাকালে দুইটি ঈদ কেটে গেছে। ২০২০ সালের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা‘র নামাজ ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশে। একই অবস্থা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। করোনাভাইরাসের কারণে দেশটিতে লকডাউন ছিল। ফলে ঈদের দিন ঘরবন্ধি ছিলেন সব ধর্মের মানুষ। দেশটিতে বসবাসরত মুসলমানরাও ঘরবন্ধি ছিলেন। ঘরবন্ধি অবস্থায় সেদেশে বসবারত মুসলমানরা পালন করেছেন ঈদ উৎসব। অনেকটা হৃদয়ে রক্তক্ষরণের ন্যায়। কারণ দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি মুসলমানরা দু‘টি ঈদের অপেক্ষায় থাকেন। এই দুই ঈদে তাঁরা ঈদ উৎসব পালন করেন ঘটা করে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের দিনে ঘুরে বেরান উৎসবের আমেজে। কিন্তু গতবার ওই আমেজ ছিল না। ছিল আতঙ্ক। করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছিল ওই আতঙ্ক। অস্ট্রেলিয়ার রমজান মাস ও আসন্ন ঈদ নিয়ে জানাচ্ছিলেন প্রবাসী সাংবাদিক শাহাব উদ্দিন শিহাব। ৭ মে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২ টায় কথা হয়। তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে বসবাস করছেন। বৈশাখী টেলিভিশনের সিলেটের ব্যুরো প্রধান ছিলেন তিনি। সিলেট প্রেক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (ইমজা) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ সিলেট সিটি করপোরেশনের পাবলিক রিলেশন অফিসার ছিলেন। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ফোন করতেই অনেকটা উচ্ছাস প্রকাশ করলেন। ২-৩ মিনিটের মধ্যে মনে হলো সেই উচ্ছাস মিয়ে গেছে। গভীর উৎকন্ঠার সাথে জানতে চাইলেন, দেশের অবস্থা কেমন। করোনার আগ্রাসন দেশকে ও দেশের মানুষকে বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। আল্লাহ এই অবস্থা থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে পারেন।

গতবারের ঈদ নিয়ে বলতে গিয়ে শাহাব উদ্দিন শিহাব জানাচ্ছিলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় কঠোরভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। স্বাস্থ্যবিধির উপর আরোপ করা হয় কড়াকড়ি। সব ধরণের ফ্লাইট বাতিল করে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় সীমান্ত। অন্যদেশের নাগরিকেদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। করোনা মোকাবেলায় দেশটির সরকার কঠোর অবস্থান নেয়। এর মধ্যে দিয়ে রমজান শুরু হয়। রমজান শেষে ঈদ উৎসব। কিন্তু ওই ঈদ উৎসব পালন করতে পারেননি মুসলমানরা। কঠোর লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধির কারণে সবাইকে ঘরবন্ধি অবস্থায় কয়েক মাস কাটাতে হয়েছে। জামাতে তারাবির নামাজ হয়নি। ৩-৪ মাস মসজিদ বন্ধ ছিল।

সাংবাদিক শিহাব জানান, এবার ঈদ উৎসব হবে অস্ট্রেলিয়ায়। যদিও একদিন আগে আবার কঠোর করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। এই অবস্থার মধ্য দিয়েই ঈদ উৎসব হবে। মসজিদে তারাবির নামাজ হচ্ছে। সিডনিতে বৃহত্তর ঈদের জামাত হবে পেরি পার্কে। সিডনিতে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা পেরি পার্কে এক সাথে ঈদের নামাজ পড়বেন। তবে এখানে দুইদিন ঈদ উৎসব ও ঈদের জামাত হয়। সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে যারা রোজা রাখেন তাঁরা একদিন আগে ঈদ উৎসব পালন করবেন। আর সৌদি আরবের সাথে মিল না রেখে যারা একদিন পর থেকে রোজা রাখেন তারা ঈদ উৎসব পালন করবেন একদিন পরে। অর্থাৎ সেখানে দুইদিন ধরে চলে ঈদ উৎসব।

সাংবাদিক শিহাব জানান, এখন থেকেই সেখানকার মুসলমানদের ঘরে ঘরে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বাঙালিদের ঘরে উৎসবের আমেজ। অনেকেই ঈদের বাজার শুরু করেছেন। শিশু ও কিশোরদের মধ্যে ওই অমেজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা এখন অপেক্ষায় আছেন ঈদ উৎসবের ঈদের দিনটির।

সেখানকার ঈদ উৎসব পালন সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক শিহাব বলছিলেন, অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন দেশের মুসলমান বসবাস করেন। লক্ষাধীক বাংলাদেশিও আছেন। যার সিংহভাগই বসবাস করেন সিডনি শহরে। ঈদের সময় দেশটিতে সরকারিভাবে কোনো ছুটি নেই। তবে ঈদকে সামনে রেখে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে নেন মুসলমানরা। পালন করেন ঈদ উৎসব।

প্রবাসী সাংবাদিক শিহাব জানান, সিডনি শহরে রয়েছে লাকেম্বা নামক একটি স্থান। এই স্থানটি বাঙালিদের মিলনমেলার স্থান। ছুটির দিনে এখানে বাঙালিরা মিলিত হয়ে আড্ডা দেন। বাঙালিদের আড্ডার স্থান লাকেম্বা। ঈদের দিনেও এই স্থানটি বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হবে। এখানে এলে পরিচিতজনদের সাক্ষাত পাওয়া যায়।

গতবার ঈদের দিনে প্রচন্ডভাবে মন খারাপ ছিল। কারণ করোনার কারণে পুরো বিশ্ব কাবু হয়ে পড়েছিল। দেশের মাটিতে পরিবারের লোকজন কোন্ অবস্থায়, তার সঠিক চিত্র ছিল না। আত্মীয় স্বজনসহ দেশবাসি কেমন ছিলেন তার চিত্র ছিল নাজুক। ওই অবস্থায় গতবার ঈদের আনন্দ মনে স্থান পায়নি। মন ভালো রাখার জন্যে ঈদের দিনও কাজে গিয়েছি। কাজ করে সময় কাটিয়েছি-জানালেন সাংবাদিক শিহাব। এবার ঈদের আনন্দ ভোগ করলেও মন পড়ে থাকবে দেশে। কারণ দেশের অবস্থা কোনোভাবেই ভালো নয়। সিডনিতে বসবাসরত বাঙালিরা উদ্বিগ্ন দেশের অবস্থা নিয়ে

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ