প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ৫০ হাজার বসেছে সিলেটে ১১৮ কোটি টাকায়

প্রকাশিত: ৪:৪২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২১

প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ৫০ হাজার বসেছে সিলেটে ১১৮ কোটি টাকায়

সিলেটে প্রথমবারের মতো গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার চালুর উদ্যোগ নিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। এজন্য গৃহিত প্রকল্পে ব্যয় হবে ১১৮ কোটি টাকারও বেশি। প্রকল্পের আওতায় সিলেট নগরীতে ৫০ হাজার প্রি-পেইড গ্যাস মিটার বসানো হবে। এজন্য শিগগিরই জরিপ কাজ শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, গ্যাসের অপচয় রোধ ও সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পে ১১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে। মাঠ জরিপ কাজ শেষ করে আগামী বছরের মার্চ থেকে প্রি-পেইড মিটার বসানোর কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে।

 

 

জালালাবাদ গ্যাসের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি রয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে-

 

 

 

“মূল্যবান জাতীয় সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয়রোধ, সাশ্রয়ী, দক্ষ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সংযোগকৃত আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

 

*এই প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হবে।

*প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের লক্ষ্যে শিগগিরই প্রয়োজনীয় জরিপ কাজ মাঠ পর্যায়ে শুরু করা হবে।

*আগামী মার্চ ২০২২ (সম্ভাব্য) থেকে পর্যায়ক্রমে প্রি-পেইড মিটার গ্রাহক আঙ্গিনায় স্থাপন করা হবে।”

 

 

প্রকল্পের কাজের জন্য জালালাবাদ গ্যাসের পরিচয়পত্রসহ কর্মীরা গ্রাহকদের বাসা-বাড়িতে যাবেন। তাদেরকে সহযোগিতা করতে বিজ্ঞপ্তিতে আহবান জানানো হয়েছে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের আওতায় তথ্য কেন্দ্র, হারানো তথ্য পুনরুদ্ধার কেন্দ্র ও অনলাইন সিস্টেমের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং সফটওয়ার স্থাপন করা হবে।

 

জালালাবাদ গ্যাস অফিস সূত্র জানিয়েছে, আবাসিকের একজন গ্রাহক বর্তমানে মাসে গড়ে ৬৬ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে তাদের গ্যাসের ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে আনা যাবে। তখন একজন গ্রাহক গড়ে সর্বোচ্চ ৪০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করতে পারেন। ফলে ২৬ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

 

 

বর্তমানে মাসে দুই চুলার জন্য ৯৭৫ টাকা বিল দেন একজন আবাসিক গ্রাহক। সিংহভাগ গ্রাহকই গ্যাসের অপচয় রোধে সচেতন নন। ইচ্ছামতো চুলা জ্বেলে রাখেন তারা।

 

প্রি-পেইড মিটার হলে গ্রাহক যেহেতু আগেই গ্যাস বিল পরিশোধ করবেন, সেহেতু তারা গ্যাসের ব্যবহারে সচেতন হবেন। অতিরিক্ত গ্যাস যাতে না জ্বলে, সেদিকে তাদের লক্ষ্য থাকবে। কারণ, প্রি-পেইড মিটারে বিল শেষ হলেই গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। তখন গ্রাহককে নতুন করে বিল পরিশোধ করে গ্যাস পেতে হবে।

 

 

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু যে গ্যাসের সাশ্রয়ই হবে, তা নয়। প্রি-পেইড মিটারে গ্রাহকদেরও লাভ আছে। মিটার স্থাপন শেষ হলে একজন গ্রাহক মাসে ৩০০ টাকার গ্যাস ব্যবহার করতে পারবেন। প্রি-পেইড কার্ড ব্যবহার করে তারা গ্যাসের সরবরাহ পাবেন। ফলে গ্রাহকের প্রায় ৬০০ টাকা মাসে সাশ্রয় হবে।

গৃহিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর সাশ্রয়কৃত গ্যাস নতুন শিল্প-কারখানায় প্রদান করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

 

 

জানতে চাইলে জালালাবাদ গ্যাসের প্রকল্প দফতরের উপ-প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. রবিউল আলম সিলেটভিউকে বলেন, ‘গ্যাসের অপচয়রোধ ও সাশ্রয়ের লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদনের পর দরপত্র (টেন্ডার) আহবান করা হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ।’

 

জালালাবাদ গ্যাসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) প্রকৌশলী মো. আবু বকর জানান, প্রকল্পটি সফল হলে পরবর্তী পর্যায়ে আরও ৫০ হাজার গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।

 

হাবিবা আক্তার জেছি //

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ