জগন্নাথপুর -পাগলা সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

প্রকাশিত: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২০

জগন্নাথপুর -পাগলা সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি : 

জগন্নাথপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে  বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জগন্নাথপুর -পাগলা সড়ক এবং জগন্নাথপুর – বিশ্বনাথ সড়কে সরাসরি  যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন হাট-বাজার সহ গ্রামাঞ্চলে বাড়ী-ঘর, রাস্তা -ঘাট ও  মৎস্য খামার পানির নীচে তলিয়ে গেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫০ টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্যায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জনসাধারণ । প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন।
থেমে থেমে  বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে দেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা, নলজুর,রত্না ও ডাউকা নদী সহ বিভিন্ন নদ-নদী ও হাওরে পানি বেড়েই চলছে। আজ সোমবার  (১৩ ই জুলাই ) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হলেও  সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর -পাগলা সড়কের মজিদপুর ও আক্তাপাড়া এলাকার নির্মাণাধীন ব্রীজের পাশ্ববর্তী বিকল্প সড়ক পানির নীচে তলিয়ে গেছে এবং জগন্নাথপুর – বিশ্বনাথ সড়কের জগন্নাথপুর এলাকায় বিভিন্ন জায়গা পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা শহর সুনামগঞ্জ  ও বিভাগীয় শহর সিলেট এর সাথে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদর জগন্নাথপুর বাজার এর মাছ বাজার , বড় ফেচির বাজার, চিলাউড়া বাজার ,কলকলিয়া বাজার ও রানীগঞ্জ বাজার এর অলিগলিতে এবং উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের  নাদামপুর, হিজলা,  কান্দারগাঁও, নোয়াগাঁও, সাদিপুর, কামারখাঁল, জগদীশপুর, কাদিপুর, পাড়ারগাঁও, মোল্লারগাঁও, খাশিলা সুনাওয়াখাই, যোগলনগর,  চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভুরাখালী, দাসনাগাঁও, হরিনাকান্দি, সমধল, বেতাউকা, গাদিয়ালা,স্বজনশ্রী,বাউধরন, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের  নোয়াগাঁও, আলমপুর, গন্ধর্ব্বপুর, অনন্তপুর,নারিকেলত রৌয়াইল, বাঘময়না,  আশারকান্দি ইউনিয়নের বড়ফেচি, মিলিত, মিঠাভরাং, কালাম্বরপুর, ঐয়ারকোণা, ধাওরাই, আটঘর, পাইলগাঁও ইউনিয়নের কাতিয়া, ফেচি, কসবা, রমাপতিপুর, মশাজান,  জগন্নাথপুর পৌর এলাকার আলখানাপার, হবিবনগর, ভবানীপুর ও পূর্ব ভবানী পুর সহ প্রায়  ৪০ টি গ্রামের মানুষ আবারো পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে এসব গ্রামের প্রায় ১১ হাজার  ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট এবং মৎস্য খামার। অনেকেই উঁচু এলাকায় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ীতে ও বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। পাগলা -জগন্নাথপুর -আউশকান্দী আঞ্চলিক মহাসড়ক এর ইছগাঁও এলাকায় পানিতে ডুবে যাওয়া সহ বেশ কয়েকটি সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফের দেখা দিয়েছে জন-ভোগান্তি।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পানি বন্দী অনেকেই  বলেন, কয়েক দিন আগেও বসত বাড়িতে পানি উঠেছিল। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আকস্মিক  বন্যার জল নেমে পড়েছিল। গত ৫ দিন ধরে আবারো ভারী বর্ষন হওয়ায় ফের নতুন করে বসত বাড়ি আর রাস্তা -ঘাটে পানি উঠে পড়েছে। আজ সোমবার বৃষ্টি না হলেও পানি বাড়ছে। নতুন নতুন এলাকার ঘর-বাড়ীতে পানি ঢুকে পড়েছে। গতকালও যে বাড়ীতে পানি ছিলনা সেই সকল বাড়ী-ঘরে বন্যার জল উটতে শুরু করেছে। রাত আসার আগেই তলিয়ে যাবে। ভীষন কষ্টে দিনাতিপাত করছি। চারদিকে পানিতে টইটম্বুর।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিচ্ছি।  প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান এবং মেম্বারগন এর সঙ্গে কথা বলে আশ্রয় কেন্দ্র গুলো ব্যবহার করা যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বন্যার্ত পানি বন্দী মানুষের মাঝে  ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ