দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকট থাকতে পারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত

প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২২

দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকট থাকতে পারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত

দিনরাত ডেস্কঃ

চলমান বিদ্যুৎ সংকট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিও কমিয়ে দিতে পারে। এ সংকট থাকতে পারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। বিশ্ববাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উপাদান প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সোমবার নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়, স্পট মার্কেটগুলোতে (খোলাবাজার) দাম বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়নশীল দেশটি প্রাকৃতিক গ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে।

এক সাক্ষাৎকারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, গত জুনে দামের অস্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বন্ধ করে দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদে সরবরাহ নিশ্চিত করতে পথ খোঁজা হচ্ছে। তিনি জানান, জ্বালানি উৎপাদক কাতারসহ বিভিন্ন দেশ ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা কেবল ২০২৬ সালের পরই চুক্তির ভিত্তিতে তেল-গ্যাস বেচবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল উপাদান তেল-গ্যাসের সরবরাহে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। এতে এশিয়ায় এলএনজির বাজারমূল্য দ্বিগুণ হয়ে যায়; ইউরোপের দেশগুলো তেল-গ্যাস মজুতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য সামান্য সরবরাহ অবশিষ্ট থাকে।

এ প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য বিশ্নেষকরা মনে করেন, খুব ব্যতিক্রম ছাড়া এসব দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকট আগামী কয়েক বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও পরিস্থিতি সামাল দিতে আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এরই মধ্যে বড় শহরগুলোতে নিয়ম করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার (লোডশেডিং) পদক্ষেপ নিয়েছে।

জ্বালানি আমদানি কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ব্লুমবার্গএনইএফের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এ বছর স্পট ভিত্তিতে প্রায় ৩০ শতাংশ এলএনজি আমদানি করেছে; গত বছর যা ছিল ৪০ শতাংশের বেশি। জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আইএমএফসহ ঋণদাতাদের কাছ থেকে সহায়তা চাইছে বাংলাদেশ।

ব্লুমবার্গএনইএফের গ্যাস বিশ্নেষক লুজিয়া কাও বলেন, এ বছর থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে উদীয়মান এশীয় বাজারগুলো আগের তুলনায় ধীরগতির এলএনজি চাহিদা বৃদ্ধি দেখতে পাবে। কারণ, দামের কারণে ক্রেতারা ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি কমিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য এবং আমদানি সীমাবদ্ধতার কারণে গ্যাস সরবরাহে তীব্র ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

সিলেট প্রতিদিন/ফাহিমা

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ