দোয়ারাবাজারে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এতিমের দুম্বার মাংস আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪

দোয়ারাবাজারে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এতিমের দুম্বার মাংস আত্মসাতের অভিযোগ

দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার অসহায়,এতিম ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য সৌদি আরব সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো দুম্বার মাংস আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধ। এখন পর্যন্ত মাংস আসার খবরও জানেনা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরাও। এনিয়ে চলছে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা।

জানাযায়,দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ২ কার্টন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২ কার্টন করে মাংস পেয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দায়িত্বে প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে দেওয়া হয়েছে ২ কার্টন ৪০ কেজি মাংস এতিম অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করার জন্য।
সৌদি আরব সরকারের দেওয়া মাংসগুলো ইউপি সদস্যদের সমন্বয়ে দুস্তদের মাঝে বিতরণ করার কথা থাকলেও এই লিল্লার মাংস ডুকেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের পেটে তাই এর দেখা পায়নি ইউপি সদস্যরা এমন অভিযোগ তাদের।

উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শফিকুর রহমান, জিয়াউল ইসলাম, আব্দুল করিম,সুলতান আহমদ,মোহন মালা,মিরা রানী নাথ জানান, লোকমুখে শুনতেছি সৌদি সরকার দুম্বার মাংস দিয়েছেন। কিন্তু এগুলো অসহায় মানুষজন পাবে দূরের কথা আমরা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরাও এর দেখা পায়নি। সৌদি সরকার গরীব অসহায় মানুষদের জন্য প্রতিবছর দুম্বার মাংস দিচ্ছেন কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব এগুলো কি করেন তা আমরা জানিনা। কখনো শুনতেও পাইনা এসব মাংস কোন গরীব অসহায় মানুষে পেয়েছে।

একই অভিযোগ করেছেন লক্ষীপুর ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য মোঃ সোহেল আহমদ(মিন্টু),মোহাম্মদ আলী,দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামরুল ইসলাম,আব্দুর রাজ্জাক।

এব্যাপারে জানতে চাইলে লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য(প্যানেল চেয়ারম্যান)মোঃ সোহেল আহমদ(মিন্টু) বলেন,দুম্বার মাংস আসছে কিনা আমার জানা নেই। মাংস আসছে বা বিতরণের বিষয়ে অফিশিয়াল এমন কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিভিন্ন ভাবে জানতে পারলাম মাংস আসছে। এগুলোত গরীব অসহায় মানুষদের জন্য আসে কিন্তু মাংসগুলো প্রতি বছর কোথায় যায়,কি করে এব্যাপারে চেয়ারম্যান সাহেব ভালো বলতে পারবেন।

উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ২৪ কার্টন মাংস বরাদ্দ দেওয়া হয়। ১৫ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া এ মাংস আসে। প্রতিটি কার্টনে ২০ কেজি করে মাংস থাকার কথা। সে হিসাবে ২৪ কার্টনে ৪৮০ কেজি মাংস ছিল। ওই রাতেই দুম্বার মাংসের কার্টনগুলো বিতরণ করা হয়।

দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন ২ কার্টন, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)১ কার্টন ও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ১ কার্টন করে মাংস পেয়েছেন ও দুটি মাদ্রাসায় ২ কার্টন দেওয়া হয়েছে। এবং উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন পরিষদে ২ কার্টন করে মাংস দেওয়া হয়।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন,দুম্বার মাংস পাওয়ার সাথে সাথে বিতরণ করা হয়েছে। ইউপি সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে বিতরণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কথা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যে সকল সদস্যরা অভিযোগ দিয়েছেন তারা আমার প্রতিপক্ষ।

দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামিমুল ইসলাম শামিম বলেন,ইউপি সদস্যরা তাদের নিজেদের হাতে এনে এগুলা বিতরণ করেছে আমি এবিষয়ে কিছু জানিনা।

দোয়ারা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন,দুম্বার গোস্ত গুলা হঠাৎ আসছে তাই তড়িঘড়ি করে যে ইউপি সদস্যকে কাছে পেয়েছি দিয়েছি বিতরণ করার জন্য। কিছু বাকি ছিলো তাও দিয়ে দিতেছি।

এবিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.আম্বিয়া আহমদ বলেন, দরিদ্র ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশে দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি সরকার। তালিকা অনুযায়ী দুম্বার মাংস দুস্থ, এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশ দেওয়া আছে। জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের এলাকার দুস্তদের দেওয়ার কথা বলে মাংস নিয়েছেন। মাংস বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে, খোঁজখবর নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ