সিলেট ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট:
সিলেটের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আট তরুণ-তরুণীকে আটক করে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। রোববার দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার এলাকায় রিজেন্ট পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তীব্র সমালোচনা। অনেকেই মন্তব্য করছেন, রিসোর্ট মালিককে শাস্তি না দিয়ে এমন কাজের মধ্য দিয়ে কয়েকটি পরিবারকে হেয় করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে রিজেন্ট পার্ক ঘেরাও করে ভুক্তভোগী তরুণ-তরুণীদের আটক করেন দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকার বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে আটজনকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি আটজনকে স্থানীয় কাজী ডেকে দেনমোহর নির্ধারণ করে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলাম ইউনিয়নের কাজী আব্দুল বারী। বিবাহিতদের মধ্যে তিনজনের ১০ লাখ করে এবং একজনকে ১২ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। বিয়ে হওয়া যুগলরা দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, ওসমানী নগর উপজেলার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম এলাকার রিজেন্ট পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে উদ্বোধন করার পর থেকে সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাম পার্ক হলেও এখানে তরুণ-তরুণীরা অবৈধ মেলামেশায় লিপ্ত থাকেন। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও এসব কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। রোববার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দারা পার্কে হানা দিয়ে তরুণ তরুণীদের কক্ষের ভেতর আটকে রাখলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ লাইভ করতে থাকে। এমনকি তরুণ-তরুণীদের নানা অপ্রীতিকর প্রশ্ন করতে শোনা যায়। তাদের ছবিও দেওয়া হয়।
ফয়সল আহমদ নামে একজন লেখেন, এলাকাবাসী ও ‘মিডিয়া ফেসবুক’ ব্যবহারকারীদের অনুরোধ প্রতিটি পদক্ষেপ আগামীতে ভেবে-চিন্তে করবেন। কারো ব্যক্তিগত জীবনের ভিডিও বা ছবি প্রকাশ করা তাদের সারা জীবনের কলঙ্ক হতে পারে। ভবিষ্যতে তাদের সন্তান হবে, তাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। সমাজ গড়তে হলে ব্যক্তি নয়, সিস্টেম বদলাতে হবে।
লিমা নামে একজন লেখেন, হায়ার ইজ দ্যা ল, দে আর এডাল্ট অ্যান্ড দ্যা হ্যাভ রাইট টু গো এনি হোয়ার, ইটস রিয়েলি শেইম ফর কান্ট্রি। মো. রিপন নামের এক ব্যক্তি জানান, রিসোর্টের মালিককে শাস্তি না দিয়ে ওদেরকে শাস্তি দিয়ে কি হবে? যাদেরকে শাস্তি দেওয়ার তাদের শাস্তি দেন।
মিডিয়ায় এভাবে প্রচারের কারণে সিলেটের মান-সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেও কেউ কেউ লিখেন। বিএনপি নেতা তছির আলী জানান, গোপনে বিয়ে দিলে ভালো হতো।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি তাজুল ইসলাম তাজুল বলেন, খবর পেয়ে মুরব্বিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে আটক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের এনে আটজনকে বিয়ে পড়িয়ে দেই এবং বাকিদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। এলাকার লোকজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে বিয়ের ব্যবস্থা করার কথা বললে এলাকার লোকজন শান্ত হন বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মোগলাবাজার থানা পুলিশ যায়। তবে স্থানীয় মুরুব্বিরা ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের জিম্মায় দিয়ে দেন। তবে তিনি বিয়ের বিষয় সম্পর্কে জানেন না বলে জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (ডালিম)
মোবাঃ- ০১৭১২ ১৭ ৪৭ ৯৬
ইমেইলঃ- newssylbangla@gmail.com
রংমহল টাওয়ার ৪র্থ তলা বন্দর বাজার, সিলেট।
Design and developed by M-W-D