সিলেট ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিলেটে জুমার নামাজে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় মসজিদের ইমাম ও খতিবকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। চাকরিচ্যুত ইমাম এবং খতিবদের সংগঠন ‘শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন’র পক্ষ থেকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় চাকরিচ্যূত ইমাম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেট মহানগরীর আখালিয়া এলাকার খুলিয়াপাড়া জামে মসজিদে।
তবে ইমামের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মসজিদ পরিচালনা কমিটি। কমিটির নেতৃবৃন্দ বলছেন, দায়িত্ব পালনে ইমামের গাফিলতি ও কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে নানা অপবাদ ও কটুক্তি এবং মুসল্লীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত পাঁচ বছর ধরে আখালিয়া খুলিয়াপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাফেজ মাওলানা ফাহিম আহমেদ। গত ১৭ জানুয়ারি তিনি জুমার নামাজের পূর্বে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করেন। বিষয়টি নিয়ে খেপে যান মসজিদ পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ। ঘটনার পরের দিন ইমামের রুমে করা একটি ভিডিও আসে সিলেটভিউ এর হাতে। ওই ভিডিওতে দেখা যায় মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোবাশ্বির আলী বলছেন, জুমার নামাজে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে ইমামের বয়ান করা তার পছন্দ নয়।
তবে কোষাধ্যক্ষ মোবাশ্বিও আলী বলেছেন, এই ভিডিও পুরো কথোপকথনের খন্ডিত অংশ। ইমাম ফাহিম আহমদ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ভিডিও একটি অংশ প্রচার করছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ঘটনার পর মসজিদের ইমাম ও খতিবকে জোরপূর্বক ১০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়। ছুটি শেষে ফিরে ইমাম জানতে পারেন তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ইমাম জানান, ১৮ জানুয়ারি তাকে জোরপূর্বক ১০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়। ২৯ জানুয়ারি তিনি মসজিদে আসেল জানানো হয় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মসজিদে আসলে সমস্যা হবে বলেও জানানো হয়। পরে খতিবদের সংগঠনের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন
খতিবদের সংগঠন ‘শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন’র সহসভাপতি মাওলানা মাসুম আহমেদ জানান, খুলিয়াপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা ফাহিম আহমেদের সাথে যা হয়েছে তা অপমানজনক। সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় মসজিদ কমিটি তাকে চাকুরিচ্যুত করেছে। এ বিষেয়ে কথা বলার জন্য মসজিদ কমিটির সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি। মাওলানা ফাহিমকে চাকুরিচ্যুত করার কারণও তারা সুস্পষ্ট করে বলছেন না।
মসজিদের মুয়াজ্জিন জানান, প্রায় সমসাময়িক সময়ে তিনি মুয়াজ্জিন ও মাওলানা ফাহিম আহমদ ইমাম হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। সুদ-ঘুষের বয়ান নিয়ে ইমামের চাকরিচ্যুতির বিষয়টি সঠিক নয়। ইমাম সাহেব অনেক সময় দেরি করে নামাজ পড়াতে আসতেন বলে দাবি করেন তিনি।
কোষাধ্যক্ষ মোবাশ্বির আলী জানান, আগে মসজিদে কমিটি ছিল না। কমিটি ছাড়াই মাওলানা ফাহিম আহমদকে ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি কমিটি গঠনের পর ইমামকে সঠিক ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ইমাম তার ইচ্ছেমতো দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি মসজিদে ঘুমিয়ে থাকতেন, ইমামতির জন্য সময়মতো তিনি মসজিদে আসতেন না।
মোবাশ্বির আলী আরও বলেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটির লোকজন নিয়ে ইমাম প্রায়ই কটুক্তি করতেন। মসজিদের মিম্বরে বসে তিনি কমিটিকে গালিগালাজ করতেন। এসব কারণে মুসল্লীদের মাঝেও নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়। তাই তাকে ইমামতি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।সুদ-ঘুষের বয়ানের জন্য তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে- এমন অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন কোষাধ্যক্ষ মোবাশ্বির আলী।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে ইমামের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (ডালিম)
মোবাঃ- 01712-174796
অনলাইন সম্পাদক : জাকারিয়া হোসেন জোসেফ
মোবাঃ- 01711-145909
ইমেইলঃ-newssylbangla@gmail.com
রংমহল টাওয়ার ৪র্থ তলা বন্দর বাজার, সিলেট।
Design and developed by M-W-D