সিলেট ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট:
পতিত শেখ হাসিনাই জুলাই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা। তার সরাসরি পরিকল্পনা এবং নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। শেখ হাসিনা জুলাই বিক্ষোভের নেতাদের হত্যা করে তাদের লাশ গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে অন্তত ১৪০০ মানুষ নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে শতকরা ১৩ ভাগ শিশু। জুলাই বিপ্লবে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘ গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার বাংলাদেশ সময় আড়াইটায় জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে শেখ হাসিনার সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ তুলে ধরে বলা হয়, একজন পদস্থ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, ১৯ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, বিক্ষোভের মূল হোতা এবং যারা সমস্যা তৈরি করছে, তাদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলো। ৪ আগস্ট সকালে এবং সন্ধ্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দুটি বৈঠক করেন। বৈঠকে যেকোনো মূল্যে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ৫ আগস্টের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পণ্ড করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে জুলাই বিক্ষোভের সময়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
জুলাই বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান পরিচালনায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তার দেওয়া সাক্ষ্যে বলেন, বিক্ষোভ দমনে যাবতীয় নির্দেশ আসত রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে। ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত কোর কমিটির এক বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের দমন এবং গণগ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী এবং ডিজিএফআইসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন এবং নির্বিচারে আটকের উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছিল বলে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রিপোর্টের বিস্তারিত (নির্বাহী সারাংশ)
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে ওএইচসিএইচআর ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট ২০২৪-এর মধ্যে সংঘটিত অভিযুক্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অবমাননা বিষয়ে একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পরিচালনা করে। বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিত এবং তৎক্ষণিক প্রভাব বুঝতে এ অনুসন্ধান চালানো হয়। সংগৃহীত সব তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং মুক্তভাবে বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ওএইচসিএইচআরের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে যে সাবেক সরকার এবং এর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হয়ে সহিংস উপায়গুলো ব্যবহার করে পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িয়ে পড়ে।
এ কারণে, শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে, হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বলপ্রয়োগ করা হয়। নির্বিচারে আটক, এবং নির্যাতন এবং অন্যান্য ধরনের নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। অধিকন্তু ওএইচএসিএইচআর যৌক্তিক কারণে মনে করে যে বিক্ষোভ এবং ভিন্নমত দমনের কৌশল হিসেবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অবগতি, সমন্বয় এবং নির্দেশনায় পরিচালিত হয়েছে। এসব গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি অপরাধ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকেও উদ্বেগজনক। তাই, কোন মাত্রার মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং নির্যাতন (স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে) ও দেশীয় আইনের অধীন গুরুতর অপরাধসমূহ সংঘটিত হয়েছে তা মূল্যায়নের জন্য অতিরিক্ত ফৌজদারি তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্মদের সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ পুনর্বহালের দাবির প্রেক্ষিতে ৫ জুন ২০২৪ হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ইতোমধ্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল, যার মূলে ছিল বিদ্যমান রাজনীতি ও পরিচালন ব্যবস্থা সমাধান করতে ব্যর্থ শাসনব্যবস্থার ভঙ্গুরতা এবং দুর্নীতি। প্রকৃতপক্ষে, অর্থনৈতিক বৈষম্য সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছিল এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে প্রবেশগম্যতার অভাব জনগণের ক্ষোভকে আরও উস্কে দিয়েছিল। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক, পেশাগত এবং ধর্মীয় পটভূমি থেকে আসা হাজার হাজার বাংলাদেশী, নারী ও শিশু বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিল। ছাত্র-জনতা অর্থপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছিল। জনগণের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ দমন এবং ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার প্রচেষ্টায় সাবেক সরকার ক্রমবর্ধমান সহিংসতাকে অবলম্বন হিসেবে বেছে নেয় এবং পদ্ধতিগতভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে সাবেক সরকার এবং আওয়ামীলীগ ক্রমাগত সশস্ত্র কুশীলবসমূহকে সুসংহত করতে থাকে। বিক্ষোভ দমনের প্রাথমিক চেষ্টা হিসেবে সরকারের মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং তার আশেপাশে ছাত্র-ছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীদের লাঠি এবং ধারালো অস্ত্র এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আক্রমণে প্ররোচিত করে। এমসয় শিক্ষার্থীরা কখনও কখনও আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। এর প্রতিক্রিয়ায় সরকার আরও গুরুতর সহিংসতার পথ বেছে নেয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ পুলিশ, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের একটি সশস্ত্র দলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে এবং অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি বড় বিক্ষোভ।
এসব ঘটনার পর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃত্ববৃন্দ সাধারণ বিক্ষোভ এবং ঢাকা ও অন্যান্য শহরে সম্পূর্ণ বন্ধের ডাক দেয় যা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন লাভ করে। এর প্রতিক্রিয়ায়, তৎকালীন সরকার বিক্ষোভকারী এবং প্রতিবাদ সংগঠকদের বিরুদ্ধে আরও সহিংস হয়ে উঠে। এ কারণে জনজীবন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, স্বাধীনতা এবং ব্যক্তির নিরাপত্তা লাভের অধিকার লঙ্ঘিত হয়। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং পুলিশের হেলিকপ্টার আকাশ থেকে বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। পুলিশ, র্যাব এবং বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মাঠে সামরিক রাইফেল এবং লোড করা শটগানের প্রাণঘাতী ছররাগুলি ছুড়ে, সেইসাথে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কম প্রাণঘাতী অস্ত্র মোতায়েন করে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ রাস্তা বন্ধ এবং কিছু স্থাপনা ভাঙ্গচুরের চেষ্টা করে। কিন্তু তখন পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলে আসছিল। এই ধরনের হামলার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য, কিছু বিক্ষোভকারী পালাক্রমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোটা ব্যবহার করে।
এই ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্রীয় সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষোভকারীদের কিছু অংশ সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে যাদের বেশিরভাগ সরকারি ভবন, পরিবহন অবকাঠামো এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে। ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী জোরদার করার নির্দেশনা প্রদান করে। ১৯ জুলাই থেকে বিক্ষোভ শেষ হওয়া পর্যন্ত, বিজিবি, র্যাব এবং পুলিশ ঢাকা এবং অন্যত্র বিক্ষোভকারীদের উপর নির্বিচারে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে, যার কারণে প্রতিবাদ কভার করতে আসা সাংবাদিকসহ অনেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় এবং আহত হয়। কিছু ক্ষেত্রে, নিরাপত্তা বাহিনী উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর খুব কাছ থেকে গুলি ছুড়ে।
যাহোক, পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর দ্বারা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংস পথ অবলম্বন করে বিক্ষোভকারীদের দমাতে পারেনি, বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। ২০ জুলাই, সরকার সাধারণ কারফিউ জারি করে এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সৈন্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছুড়ে যা বিক্ষোভকারীদের নিহত বা গুরুতর আহত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেনি; কেবল একজন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ থেকে জানা, ৩ আগস্ট সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় জুনিয়র সেনা অফিসারেরা বেসামরিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ প্রত্যাখানের জন্য চাপ দিতে থাকে; বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালাতে তারা অস্বীকৃতি জানান।
তা সত্ত্বেও, সেনাবাহিনী আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের প্রতিরক্ষা সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে আরও সংহিস হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা পাল্টা আক্রমণের আশংকা ছাড়াই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের অনুমতি পায়। এর মধ্যে ২০ ও ২১ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধের সময় পুলিশ এবং র্যাব গুলি ছুড়ার পূর্ণ ছাড়পত্র পায়। এতে নিহত ও আহতের ঘটনা ঘটে। জুলাইয়ের শেষের দিকে, সেনাবাহিনীও ব্যাপক অভিযানে অংশ নেয়, যেখানে পুলিশ এবং র্যাব গণবিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে নির্বিচারে বিপুল সংখ্যক মানুষকে গ্রেফতার করে। সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য থেকে আরও জানা যায় যে ৫ আগস্ট বিক্ষেভকারীরা যে ঢাকা মার্চের ডাক দেয় তা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে থামানোর জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশকে একটি সরকারি পরিকল্পনা তৈরিতে অংশ নিয়েছিল। সেই পরিকল্পনা অনুসারে, পুলিশ অনেক বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করে, কিন্তু সেনাবাহিনী এবং বিজিবি বৃহৎঅর্থে নিস্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়েছিল এবং ফলে বিক্ষোভকারী নির্বিঘ্নে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
গোয়েন্দা সার্ভিসেস–ডিরেক্টরেট জেনারেল অব আর্মড ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই), ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই) এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) – এবং পুলিশের বিশেষ শাখা – গোয়েন্দা শাখা, বিশেষ শাখা এবং কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিটিসি)-প্রতিবাদকারীদের দমনের নামে সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। তারা গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করে নজরদারির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য এক সংস্থা থেকে আরেক সংস্থার সঙ্গে শেয়ার করে এবং জুলাইয়ের শেষের দিকে ব্যাপকহারে নির্বিচারে গ্রেফতারের স্বপক্ষে প্রচারণা চালায়। গোয়েন্দা শাখা বন্দীদের কাছ থেকে তথ্য ও স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নিয়মিত ও নির্বিচারে আটক ও নির্যাতনের আশ্রয় নেয়। সিটিটিসি-এর সদর দপ্তর শিশুসহ নির্বিচারে আটককৃতদের বন্দি স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। গোয়েন্দা শাখা এবং ডিজিএফআই যৌথভাবে ছাত্রনেতাদের সেখানে অপহরণ ও নির্বিচারে আটক করে এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে চাপ দেয়।
ডিজিএফআই, এনএসআই এবং গোয়েন্দা শাখার লোকজন আহতদের জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সেবায বাধাগ্রস্ত করে, প্রায়শই হাসপাতালে রোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ, আহত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং চিকিৎসাকর্মীদের ভয়-ভীতি দেখাতে থাকে। এ পরিস্থিতি আইন সহায়তাকারী কর্তৃপক্ষ বা বিচার বিভাগ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি যাতে নির্বিচারে আটক ও নির্যাতনের ঘটনা এবং অনুশীলনগুলি বন্ধ করা যায়। এ ধরনের কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়নি।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এই পদ্ধতিগত এবং সংগঠিত গুরুতর মানবধিকার লঙ্ঘনগুলো চাপা রাখার পক্ষ কাজ করে। এনটিএমসি মন্ত্রণালয়সমূহের নির্দেশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের সাথে একত্রে কাজ করে যাতে বিক্ষোভকারীরা তাদের কর্মসূচি সংগঠিত করতে ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ব্যবহারের সুযোগ না পায়। সহিংসতা সম্পর্কিত তথ্য ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আদান-প্রদানের জনগণের অধিকার সংকুচিত করা হয়। একই সঙ্গে, ডিজিএফআই, এনএসআই এবং র্যাব মিডিয়া আউটলেটগুলিকে গণবিক্ষোভ এবং তাদের সহিংস দমন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ এবং বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্ট না করার জন্য মিডিয়ার ওপর চাপ দেয়। ডিজিএফআই পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়ে ভিকটিম, তাদের পরিবার এবং আইনজীবীদের নিরব হওয়ার ব্যাপারে ভয় দেখাতে থাকে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সূত্রের থেকে পাওয়া প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ওএইচসিএইচআর এ সিদ্ধান্তে পৌঁচ্ছে যে পুলিশ, আধাসামরিক, সামরিক এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আওয়ামীলীগের সাথে জড়িতরা সহিংস উপাদানগুলিকে ব্যবহার করে একটি সমন্বিত এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের পূর্ণ জ্ঞান, সমন্বয় এবং নির্দেশনার ভিত্তিতে এ সহিংসতা ঘটানো হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা শাখার তৎপরতাগুলো সমন্বয় করতেন এবং নেতৃত্ব দিতেন। উভয়পক্ষ একাধিক সূত্র থেকে বাস্তবে কী ঘটছে সেই পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রতিবেদন পেতেন।
ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তকর্তাদের সাক্ষ্য অনুসারে, ২১ জুলাই এবং আগস্টের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন সরবরাহ করতেন যেখানে বিশেষভাবে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতা এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা নিতে সাইট পরিদর্শন করেন। অধিকন্তু, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, বিজিবি, র্যাব, ডিজিএফআই, পুলিশ এবং গোয়েন্দা শাখার দ্বারা পরিচালিত কার্যক্রমের অনুমোদন ও নির্দেশনা প্রদানের জন্য সরাসরি আদেশ এবং অন্যান্য নির্দেশনা জারি করে। এসকল বাহিনী প্রতিবাদকারী ও সাধারণ নাগরিকদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা এবং নির্বিচারে আটকের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
২০২৪ সালের আগস্টের শুরুতে সাবেক সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিল। জনগণ প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং অন্যান্য গুরুতর প্রতিশোধমূলক সহিংসতায় যুক্ত হয়ে পড়ে; বিশেষ করে, আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং আওয়ামী লীগের অনুগত সমর্থক, পুলিশ এবং মিডিয়াকে এ ধরনের সহিংসতার শিকার হয়।
বিক্ষোভের চলাকালে এবং পরে, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন, আহমেদিয়া সম্প্রদায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা উৎশৃঙ্খল জনতা কর্তৃক সহিংস আক্রমণের শিকার হন। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া এবং কিছু উপাসনালয় আক্রমণ করা হয়। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘটনা ঘটে। জমিজমা সংক্রান্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ, আন্তঃব্যক্তিক দ্বন্দ্ব এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হতে থাকে। কিছু জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি সমর্থক এবং স্থানীয় নেতারাও প্রতিশোধমূলক সহিংসতা এবং স্বতন্ত্র ধর্মীয় ও আদিবাসী গোষ্ঠীর উপর হামলার সাথে জড়িয়ে পড়ে। যাহোক, ওএইচসিএইচআর-এর প্রাপ্ত তথ্যে এটা প্রতীয়মান হয়নি যে ঘটনাগুলো কেন্দ্রিয় নেতৃত্বের নির্দেশনায় সংগঠিতভাবে ঘটেছে বরং তারা সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতার নিন্দা করেছে।
৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী বা আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা সংঘটিত কোনো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের ঘটনা তদন্ত বা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর পদক্ষেপগুলির মধ্যে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) পাশাপাশি নিয়মিত আদালতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই উদ্যোগগুলো নানা কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে যা ঘটছে মূলত আইন প্রয়োগকারী এবং বিচার বিভাগের আগের বিদ্যমান কাঠামোগত ঘাটতিগুলোর কারণে। পুলিশী অসদাচরণ যেমন গণমামলার ভিত্তিহীন অভিযোগ অভিযোগ আনা, কিছু নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দ্বারা ক্রমাগত ভীতি প্রদর্শন এবং প্রমাণ জালিয়াতি। অনেক অভিযুক্ত কর্মকর্তা পূর্বের অবস্থানে রয়ে গেছে। আইসিটি ও অন্যান্য আদালদের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ নিয়ে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার স্বতন্ত্র ধর্মীয় ও আদিবাসী গোষ্ঠীর উপর হামলার ঘটনায় ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে। প্রতিশোধমূলক সহিংসতাসহ অন্যান্য অনেক অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা এখনও দায়মুক্তি ভোগ করছে।
সরকারি ও বেসরকারি সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ওএইচসিএইচআর-এর কাছে মনে হয়েছে এ বিক্ষোভ চলাকালে ১,৪০০ জনের মতো মানুষ নিহত হতে পারে, যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত প্রাণঘাতী অস্ত্র, সামরিক রাইফেল এবং শটগানের গুলিতে নিহত হয়। আরও হাজার হাজার গুরুতর আহতরা জীবনবদলে দেওয়ার মতো গুরুতর আঘাতের শিকার হয়েছেন। ওএইচসিএইচআরের নিকট পুলিশ ও র্যাব প্রদত্ত তথ্য অনুসারে ১১ হাজার ৭ শত জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার ও আটক করা হয়।
হতাহতের পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে নিহতদের মধ্যে প্রায় ১২-১৩ শতাংশ শিশু। পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীও শিশুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। শিশুরা হত্যা, উদ্দেশ্যমূলকভাবে পঙ্গু, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানবিক পরিস্থিতিতে আটক, নির্যাতন এবং অন্যান্য ধরনের মন্দ আচরণের শিকার।
বিক্ষোভে প্রথম দিকের অগ্রভাগে থাকার কারণে নারী ও মেয়েরাও নিরাপত্তা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা হামলার শিকার হযন। তারা বিশেষভাবে যৌন ও লিঙ্গভিচসিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়। যার মধ্যে রয়েছে লিঙ্গভিত্তিক শারীরিক সহিংসতা, ধর্ষণের হুমকি এবং কিছু নথিভুক্ত ঘটনার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা সংঘটিত যৌন নির্যাতন। ওএইচসিএইচআর প্রতিশোধমূলক সহিংসতা হিসাবে যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের হুমকি সম্পর্কিত অভিযোগ পেয়েছে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা এবং বাংলাদেশে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার সম্পর্কিত তথ্য কম আসার পরিপ্রেক্ষিতে, ওএইচসিএইচআর মনে করে যে এটি যৌন সহিংসতার সম্পূর্ণ তথ্য নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ভিকটিমদের পরিপূর্ণ সহায়তার জন্য এর প্রভাব অনুসন্ধানের আগামীদিনে এর গভীর অনুসন্ধান প্রয়োজন।
পুরানো আইন ও নীতি, দুর্নীতিগ্রস্ত শাসন কাঠামো এবং আইনের শাসনের অবক্ষযয়ের কারণে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে শক্তির ব্যবহার হয়েছে। পুলিশের সামরিকীকরণ, নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক দায়মুক্তি প্রদান করা হয়েছে। সাবেক আওয়ামী সরকার শান্তিপূর্ণ নাগরিক ও রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন করার জন্য ব্যাপকভিত্তিক আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর উপর নির্ভর করেছিল। এমন নিপীড়নমূলক পরিস্থিতির কারণে বিরোধীরাও সরকারের প্রতি বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে প্রতিবাদ সহিংসতার দিকে ধাবিত হয়।
ওএইচসিএইচআর-এর ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং চলাকালে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের অন্তর্নিহিত মূল কারণগুলির খুঁজে দেখা চেষ্টা করেছে, জরুরি ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করেছে যাতে একই ধরনের গুরুতর মানবাধিকারের লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এই লক্ষ্যে, ওএইচসিএইচআর এই প্রতিবেদনে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছে, যার মধ্য রয়েছে নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের সংস্কার, দমনমূলক আইন ও নীতি বাতিল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান মানবাধিকার সঙ্গে সাজুয্য রেখে আইন সংশোধন, প্রাতিষ্ঠানিক ও শাসন খাতের সংস্কার, এবং বৃহত্তর রাজনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বৃহত্তর পরিবর্তন যাকে করে বৈষম্য কামানো, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
এই ক্ষেত্রে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে ন্যায্য এবং স্বাধীন ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদে প্রতিকারের পদ্ধতি স্থির করা যা জাতীয় মানসিক নিরাময়কে প্রক্রিয়া সহায়তা করবে। এর অংশ হিসেবে ওএইচসিএইচআর একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সংলাপ এবং পরামর্শের মাধ্যমে একটি সামগ্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বাস্তবতানির্ভর ক্রান্তিকালীন বিচার প্রক্রিয়ার সুপারিশ করছে। এ বিচার প্রক্রিয়া দাঁড় করানো লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সাযুজ্যময় সবচেয়ে দায়ী অপরাধীরদের জন্য বিচার নিশ্চিত করা। এটি করা হবে ভিকটিমকেন্দ্রিক এক বৃহৎ অ্যাপ্রাচ অনুসরণের মাধ্যমে যা মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত বিচার এবং সুরক্ষায় সহায়কে হবে। এ কাজটি করা হবে সত্যাসন্ধান, ক্ষতিপূরণ, স্মৃতিসংরক্ষণ, নিরাপত্তা সেক্টর কর্মকাণ্ড যাচাই-বাছাই, এবং অন্যান্য ব্যবস্থা যা পুনরাবৃত্তি রোধের নিশ্চয়তা দেবে। এই ধরনের উদ্যোগ সামাজিক সংহতি, জাতীয় নিরাময় এবং বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের পুনর্মিলনকে সহায়তা করবে।
ওএইচসিএইচআর দায়বদ্ধতা সমর্থন করার লক্ষ্যে প্রতিবাদের সাথে সম্পর্কিত লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের আরও স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের সুপারিশ করছে। ওএইচসিএইচআর এই প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসরণ ও বাস্তবায়নের সুবিধাসহ বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত।
ওএইচসিএইচআর ঘটনার ফলাফল এবং সুপারিশগুলো অনলাইনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী ও অন্যান্য ২৩০ বাংলাদেশীর সাক্ষাৎকার গ্রহণের ভিত্তিতে তৈরি করেছে। সরকার, নিরাপত্তা বিভাগ এবং রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তাদের আরও ৩৬টি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ঘটনা সংশ্লিষষ্ট সরেজমিন অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন অনেক প্রাক্তন এবং বর্তমান সিনিয়র কর্মকর্তারা রয়েছে। তথ্য-উপাত্তগুলো সত্যতা ভিডিও এবং ফটো, মেডিকেল ফরেনসিক বিশ্লেষণ এবং অস্ত্র বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ সাপেক্ষে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। একটি ঘটনা বা অপরাধ ঘটেছে এবং তা বিশ্বাস করার মতো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ আছে সেগুলোও ওএইচসিএইচআর অনুসন্ধান করা হয়েছে। একজনের অপরাধীর অপরাধ প্রমাণের জন্য এসব মান প্রমাণক হিসেবে ফৌজদারি কার্যধারায় অপরাধ প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় মানদণ্ডের চেয়ে কম। তবে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দ্বারা আরও ফৌজদারি তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (ডালিম)
মোবাঃ- 01712-174796
অনলাইন সম্পাদক : জাকারিয়া হোসেন জোসেফ
মোবাঃ- 01711-145909
ইমেইলঃ-newssylbangla@gmail.com
রংমহল টাওয়ার ৪র্থ তলা বন্দর বাজার, সিলেট।
Design and developed by M-W-D