আমেরিকা প্রবাসী জেসমিন আক্তারের ঈদের স্মৃতিচারণ

প্রকাশিত: ১:৫৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২০

আমেরিকা প্রবাসী জেসমিন আক্তারের ঈদের স্মৃতিচারণ

শামিমা আক্তার মিলিঃ

প্রবাসের মাটিতে ঈদ উৎসব ছিলো বাঙালিদের মিলন মেলা। বছরে দুইটি ঈদের অপেক্ষায় থাকমতাম। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সাজসাজ রব নেমে আসতো। ঈদের আগের দিন থেকে সবাই উল্লাসে মেতে উঠতেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস ওই আনন্দ আর উল্লাস কেড়ে নিয়েছে আমাদের জীবন থেকে।আমেরিকায় বসবাসরত হেল্পিং হ্যান্ডের কার্যকরি সভাপতি জেসমিন আক্তার অতীতের ঈদ আর বর্তমান ঈদের তফাত তুলে ধরেন দৈনিক বায়ান্নের কাছে। ২৮ জুলাই দুপুরে তিনি কথা বলার সময় অনেকটা বেদনাহত সুর ভেসে আসে কন্ঠ থেকে।
তিনি জানাচ্ছিলেন, আমরা যারা বাঙালি আমেরিকায় বসবাস করি, সবাই মিলে ঈদ উৎসব পালন করতাম জাকজমকভাবে। কিন্তু ওই উৎসব এখন যেন স্মৃতিময় হয়ে উঠছে।
ঈদ উৎসবের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগ ব্রোঞ্জ শাখার সেক্রেটারি জেসমিন আক্তার বলেন, পুরো রমজান মাস রোজা রেখে প্রবাসী বাঙালি মুসলমানরা এবাদত বন্দেগী করতেন। রমজান মাসের শেষ দিকে উৎসবের আমেজ নেমে আসতো সবার মধ্যে। ঈদের আগের দিন চাঁন রাত পালন করতাম বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
তিনি বলেন, ব্রোঞ্জ এর স্টার্লিং বাংলাবাজারে বাঙালিদের মিলন মেলায় পরিণত হতো। বাঙালিদের পদচারণা থাকতো গভীর রাত পর্যন্ত। ঘরের সবাই ছুটে যেতেন ওই বাংলাবাজারে। শিশুরা আনন্দে মেতে উঠতো। ঈদের যাবতীয় কেনাকাটা হতো ওই রাতে। রাস্তার পাশে সারি সারি ফুসকার দোকানে জটলা লেগে থাকতো গভীর রাত পর্যন্ত। মেহেদী সাজের জন্যে মেতে উঠতেন মেয়েরা। দীর্ঘ সময় পর একে অপরের সাথে সাক্ষাত হতো। কী যে ভালো লাগতো।
ঈদের দিন নামাজ শেষে একে অপরের বাড়িতে বেড়াতে যেতেন। এক টেবিলে নাস্তা খাওয়া হতো। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হতো সরাসরি সাক্ষাত করে। বিশেষ করে শিশু, কিশোর, কিশোরীরা আনন্দে আনন্দে দিন কাটিয়ে দিতেন। গত রমজানের ঈদে ওইসব আনন্দ, উল্লাস স্মৃতিময় হয়ে উঠে।
আওয়ামী ফ্রেন্ডস সার্কেল ব্রিটিশ বাংলাদেশ এর উপদেষ্টা জেসমিন আক্তার জানান, করোনা ভাইরাস ঈদ উৎসবকে মুছে দিচ্ছে মুসলামদের জীবন থেকে। গত এপ্রিলের ঈদ উল ফিতর সম্পর্কে বলতে তিনি বলেন, করোনার কারণে বিপর্যস্ত আমেরিকা। সরকার লকডাউন ঘোষণা করে। কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেনি। মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই অবস্থায় ঈদ আসে। ঈদের নামাজ হয়নি বাইরে। ঈদের সময় যে মিলন মেলা হয়, তাও হয়নি। একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে মোবাইল ফোনে। বেদনাদায়ক পরিস্থিতি। একই অবস্থা চলছে এখনো।লকডাউন কিছুটা শিথিল। দুই দিন পর ঈদ উল আজহা। এবারও মসজিদে গিয়ে পুরুষরা ঈদের নামাজ পড়তে পারবেন কীনা তাতে সন্দেহ রয়েছে। তবে এটা সত্য যে উৎসবের ঈদ পালন করা সম্ভব হবে না। সকলকে ঘরেই থাকতে হবে। ঘরবন্দি হয়েই পালন করতে হবে ঈদ। মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তিনিই আমাদেরকে করোনার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে পারেন।
অনিশ্চিত জীবনের মধ্যে অবস্থান করেও জেসমিন আক্তার দেশের অসহায় মানুষের খবর নিচ্ছেন। সিলেট শহরতলির খদিমে অবস্থিত সামাজিক প্রতিবন্ধি মেয়েদের পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ফলমূল পাঠিয়েছেন। দৈনিক বায়ান্নের সিলেট ব্যুরো অফিসের মাধ্যমে ওই ফলমূল সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন জেসমিন আক্তার

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ