তিউনিসিয়ার স্বাধীনতা-সংক্ষিপ্ত ইতিহাস,

প্রকাশিত: ৮:০০ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২০

তিউনিসিয়ার স্বাধীনতা-সংক্ষিপ্ত ইতিহাস,

তিউনিসিয়া একটি মুসলিম দেশ। ২৭ হিজরী সনে ইসলামের তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান ইবনে আফফান রা.-এর খেলাফতের সোনালি শাসনামলে উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি ইসলামী শাসন বলয়ের অধীনে আসে। খলীফা উসমান রা.-এর খালাতো ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে সা‘আদ ইবনে আবী সোরার নেতৃত্বে ইসলামী বাহিনী লিবিয়ার তারাবুলস নগরীর পথে গিয়ে তিউনিসিয়া জয় করেছিলেন। দেশটির নাম ছিল তখন ‘আফরিকিয়া’। তিউনিসিয়াতেই ৭৯ হিজরী সনে দেশটির গভর্নর হাস্সান ইবনে নো‘মানের নির্দেশে ইসলামী ইতিহাসের প্রথম ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই ইউনিভার্সিটির আরবি নাম হলো ‘‘আল জামিয়াতুয যাইতুনিয়া’। তিউনিসিয়ায় মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ওই যুদ্ধ ‘জিহাদুল আবাদিলা’ নামে খ্যাত ছিল। কারণ, ঐ যুদ্ধে ‘আবদ’ শব্দবিশিষ্ট আবদুল্লাহ নামের সাতজন সাহাবী শরীক ছিলেন। তাঁরা হলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবনে উমর, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস, আবদুল্লাহ ইবনে যোবায়ের, আবদুল্লাহ ইবনে জাফর এবং আবদুল্লাহ ইবনে সাদ ইবনে আবী সোরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমায়ীন)। [পরবর্তীতে তিউনিসিয়া বিদেশী শাসনাধীনে চলে যায়। ১৯৫৬ সালে দেশটি ফ্রান্সের শাসনমুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।] খলীফা উসমান রা.-এর শাসনামলে মুসলমানরা এদেশ জয় করার পর ‘কিরওয়ান’ নামক শহরটির পত্তন ঘটে। মুসলিম বাহিনীর মহান সেনাপতি উকবা ইবনে নাফে ফাহরী রা. গভীর চিন্তা-ভাবনার পর এ শহরটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আফ্রিকার এই অংশটি মুসলিম শাসনাধীন আসার পর উকবা ইবনে নাফে এখানে বড় বড় ইসলামী পন্ডিত ওলামা বুদ্ধিজীবীদের এক সমাবেশের আয়োজন করেন এবং তিনি সেই সুধী সমাবেশে সমবেত শ্রোতাবৃন্দকে সম্বোধন করে বলেছিলেন
‘‘এই বিজিত এলাকার জনগণের সঙ্গে দ্বীন ও ঈমানের কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধেরও কোনো দাম নেই। তাদের নিয়ম-শৃঙ্খলা ও নীতি-নৈতিকতায় অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে প্রাথমিক পর্যায়ে কড়া শাসনব্যবস্থায় রাখতে হবে। তা না হলে তারা সত্যিকার মানুষ হিসাবে গড়ে উঠবে না। বরং সামান্য প্রশ্রয় পেলে পুনরায় নিজেদের জাহিলী নিয়ম-রীতি ও চালচলনে ফিরে যাবে। এজন্যে আমার অভিমত হলো, মুসলমানরা তাদের সংশোধনে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখলেও এদের সাথে একত্রে বসবাসের বদলে তাদের জন্যে আলাদা একটি শহর গড়ে তোলা দরকার। যেন বর্তমান অবস্থায় তাদের সাথে অধিক মেলামেশায় মুসলমানরাও তাদের বর্তমান চালচলনে প্রভাবিত হয়ে না পড়ে।”
সুধী সমাবেশের শ্রোতারা সেনাপতি উকবা ইবনে নাফে ফাহরী রা.-এর প্রস্তাবটির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করেন। অতঃপর তিউনিসিয়ার মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত কিরওয়ান নামক শহরটিতে অস্থানীয় মুসলমানদের বসবাসের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এখানেই তিউনিসিয়ার সেই প্রথম ঐতিহাসিক মসজিদ অবস্থিত, যা ৫০ হিজরী মোতাবেক ৬৭০ সনে সেনাপতি উকবা ইবনে নাফে রা.-এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে তিউনিসিয়ার স্থানীয় জনগণ ইসলামী জীবনবোধ, চালচলন, আচার-ব্যবহার ও বিশেষ মার্জিত জীবনাচারে মুগ্ধ হয়ে দলে দলে ইসলামে দীক্ষিত হতে থাকে।
১৮৩ হিজরী মোতাবেক ৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ইবরাহীম ইবনে আগলাব তিউনিসিয়ায় আগলাবী রাজত্বের ভিত্তি স্থাপন করেন। তখনকার মুসলিম জাহানের প্রাণকেন্দ্র রাজধানী বাগদাদে খলীফা হারুনুর রশিদ তখন শাসন ক্ষমতায় সমাসীন। তিউনিসিয়া থেকে গিয়েই ৮২৭ খ্রিস্টাব্দে ইমাম মালিকের শিষ্য কাজী (বিচারপতি) আসাদ ইবনে ফোরাত সামুদ্রিক পথে অভিযান চালিয়ে ইটালির সাকালিয়া [সিসিলি] দ্বীপ জয় করেন। ২৯৮ হিজরী মোতাবেক ৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ওবায়দুল্লাহ আলমাহদী আগালিবাকে পরাজিত করে এখানে ওবায়দী ফাতেমী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাতেমী খেলাফতই পরে মিসর ও ফিলিস্তিন পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। ওবায়দী শাসকদের প্রথম রাজধানী মাহদিয়া (তিউনিসিয়া)তে ছিল। হিজরী সপ্তম শতকের মাঝামাঝি সময় ফ্রান্সের ক্রুসেডীয় (খ্রিস্টান) শাসক ৯ম লুই তিউনিসিয়া দখল করেছিলেন। কিন্তু স¤্রাট লুই মারাত্মক কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার ক্রুসেডীয় অভিযান ব্যর্থ হয়। হিজরী ১০ম শতকে স্পেনের স¤্রার্ট ৫ম চার্লস তিউনিসিয়ার উপর হামলা ও দখল করার পর সেখানে রক্তপাত ঘটালেও উসমানীয় সা¤্রাজ্যের এডমিরাল খায়রুদ্দীন বারবারোসা সামুদ্রিক যুদ্ধে তাকে পরাজিত করেন। (৯৪৪ হিজরী মোতাবেক ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দ) এভাবে তিউনিসিয়া তুরস্কের উসমানিয়া খেলাফতের অধীনে চলে যায়। তারপর ১০৭৬ হিজরি মোতাবেক ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সামুদ্রিক বাহিনী তিউনিসিয়ার উপর গোলা বর্ষণ করে। তবে ক্রুসেডীয়রা তা দখলে নিতে সমর্থ হয়নি। অবশেষে ১২৯৯ হিজরি মোতাবেক ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হবার পর পুনরায় তিউনিসিয়ার উপর হামলা চালিয়ে তা দখল করে নেয়। প্রায় পৌনে এক শতক পর্যন্ত তিউনিসিয়ার উপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসন বহাল থাকে। এই দীর্ঘকাল ফ্রান্সের শাসনাধীন মরক্কো এবং আলজেরিয়া ইত্যাদি এলাকার মতো ফরাসী ভাষাই এখানকার সরকারি ভাষা হিসাবে চালু থাকে। ভাষার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপিয়ান কৃষ্টি-কালচারের প্রাধান্যও দেশটিতে বৃদ্ধি পায়।
হাবীব বরগুইবা : ফ্রান্স থেকে তিউনিসিয়া ১৯৫৬ সালে স্বাধীনতা লাভ করার পর হাবীব বরগুইবা (আবু রাকিবা) তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। হাবীব বরগুইবা ৩৩ বছর তিউনিসিয়ার ক্ষমতায় সমাসীন ছিলেন। তিউনিসিয়াকে সিক্যুলার তথা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বানাবার জন্যে হাবীব বরগুইবা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। হাবীব বরগুইবার শাসনামলেই ইসলামের নিষ্ঠাবান নেতারা দেশটিতে জুলুম নিপীড়নের শিকার হন এবং তারা ভিন্ন দেশের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হন।
জয়নুল আবেদীন ইবনে আলী : ১৯৮৯ সালে তিউনিসিয়ার সেনাবাহিনী প্রধান জয়নুল আবেদীন ইবনে আলী হাবীব বরগুইবাকে ক্ষমতাচ্যুত করে তিউনিসিয়ার ক্ষমতায় বসেন। বরগুইবার চালু করা ইসলামবিরোধী ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নীতিকে জয়নুল আবেদীন অধিক জোরদার করেন। বরং এই মুসলিম দেশটিতে পাশ্চাত্যের মানসিক দাস জয়নুল আবেদীন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ চালু করতে গিয়ে যথেষ্ট কঠোরতার আশ্রয় নেন এবং এই কঠোরতাকে তিনি নিজের জন্যে গর্ব ও সুনামের বিষয় বলে মনে করতেন। তার শাসনামলে মুখে দাড়ি বিশিষ্ট যেকোনো পুরুষ এবং হিজাব (পর্দা) ধারী যেকোনো মহিলাকে সন্দেহের চোখে দেখা হতো। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে এবং সরকারি অফিস-আদালতে হিজাব পরিহিতা নারী ও দাড়ি বিশিষ্ট পুরুষদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত ছিল। কোনো নারী ইসলামী পর্দা (যা শরীয়তে ফরয) এবং স্কার্ফ পরে স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানে গেলে পুলিশ প্রথমে তার স্কার্ফটি খুলতে বাধ্য করতো। হোটেল-রেস্তুরাঁয় মদ্যপানের ব্যাপক রেওয়াজ ছিল। লিভারেল সোসাইটির ব্যক্তিরা খাবারের আগে মদপানে অভ্যস্থ ছিল। আবাসিক হোটেলসমূহে, সুইমিংপুলগুলোতে তথাকথিত বড় ঘরের নারী-পুরুষরা সাঁতারবস্ত্র পরে একসঙ্গে সাঁতার কাটতো। মূলত জয়নুল আবেদীনের পাশ্চাত্য নগ্ন সভ্যতাপ্রীতির কারণেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন এক বিবৃতিতে বলেছিলেন
‘‘তিউনিসিয়ার মতো লিভারেল রাষ্ট্র মুসলমানদের জন্যে একটি ‘মডেল রাষ্ট্রে’র মর্যাদা রাখে।’’
জয়নুল আবেদীন তিউনিসিয়াকে মূলতঃ একটি ‘পুলিশ রাষ্ট্রে’ পরিণত করেছিলেন। সেখানে পরস্পরের সম্পর্ক ছিল গুপ্ত পুলিশের মতো। প্রেসিডেন্ট এবং সরকারের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার সমালোচনাসূচক কথা বলার অর্থই হলো নিজের জন্য মস্ত বড় বিপদ ডেকে আনা। বিত্তশালীদের সম্পর্ক হলো শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে যারা পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণা ও চাল-চলনে অধিক প্রভাবিত। দেশের জাতীয় সম্পদের ওপর তাদেরই পূর্ণ কর্তৃত্ব। গায়ের জোরে চলতো দুর্নীতি অসাধুতা। সমাজের গরিব শ্রেণির লোকেরা দারিদ্র্যপীড়া ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হতো। ইসলামপন্থী লোকেরা সরকারি জুলুম-নিপীড়ন ও ইসলামবিরোধী অনুসৃত নীতির ফলে সম্পূর্ণ কোণঠাসা হয়ে থাকতো। এ কারণে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকেই জনচিত্তে বিদ্রোহের আগ্নেয়গিরি ছিল বিস্ফোরণ উন্মুখ। অবশেষে জনঅসন্তোষের সেই বিস্ফোরণের বজ্রধ্বনিতেই তিউনিসিয়ার শাসক জয়নুল আবেদীনের ক্ষমতার গদি কাত হয়ে পড়ে।
তিউনিসিয়ার জনসংখ্যা বড় জোর দেড় কোটি। এর আয়তন ৬৪ হাজার বর্গমাইল। জনসংখার শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমান আর বাকি ৫ ভাগ খ্রিস্টান। ১৯৫৮ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে, যা পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। একটি বিদেশী পত্রিকায় প্রকাশিত তিউনিসীয় জনৈক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের সাক্ষাতকারের প্রতি লক্ষ্য করলে দেশটির যে অবস্থা ফুটে ওঠে, তা আরও বিশ্রী। সেখানকার পরিস্থিতির পটভূমি বলতে গিয়ে হাশেমী হাবীব নামক ঐ ব্যক্তির উক্তি হলো
“ক্ষমতা যতই সুদৃঢ় হোক জনগণের উপর যদি অব্যাহত জুলুম নিপীড়ন চলে, তাদের অধিকারকে পদদলিত করা হয়, তাহলে একদিন না একদিন জনতার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটবেই। এটা কে জানতো যে, দেশটির জনৈক বেকার গ্রাজুয়েট যুবক শত চেষ্টার পরও চাকরি ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পেরে অবশেষে গরিব পিতা-মাতার খাবার যোগাড়ে তরকারির দোকান দেয়, আর তার সবজির দোকানটি পুলিশ লাথি মেরে ফেলে দেয়ায় সেই অপমানবোধে জীবন সম্পর্কে হতাশাগ্রস্ত যুবকটি নিজ শরীরে আগুন লাগিয়ে জীবন বিসর্জন দেবে, আর সে খবর দেশময় ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনচিত্তে অসন্তোষের চাপা আগুন কেবল তিউনিসিয়াতেই নয়, এলাকার অন্যান্য দেশের স্বৈরাচারদের গদিকেও জ্বালাতে শুরু করবে?”
তিউনিসিয়ার নাগরিক আরও বলল
“জয়নুল আবেদীন ছিল মূলত ‘জয়নুল ফাসেকীন’। আমাদের দেশ তিনউনিসিয়া এত গরিব নয়। স্বাধীনতার পর সরকার সমূহভালোর মধ্যে দুটি কাজ করেছে। একটি শিক্ষা, অপরটি স্বাস্থ্যসেবা। শিক্ষিতের সংখ্যা শতকরা একশ’। উচ্চ শিক্ষার জন্যে আমাদের বাইরে যেতে হয়না। আমাদের দেশ প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। এ কারণেই কোনো তিউনিসিয়ার নাগরিক সৌদি আরবে চাকরি করতে যায় না। ডক্টর ইঞ্জিনিয়ারও প্রচুর। কিন্তু সবচাইতে বড় সমস্যা ছিল সরকার তার ভিন্নমতের নাগরিকদের প্রতি চরম নিপীড়ন ও দমননীতি চালাতো। বিগত দিনগুলো বিরোধী ১৮০০ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে কারাবন্দী করা হয়েছে।
শেষের দিকে সেখানে মিডিয়ার উপর কঠোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। জনগণের কোনো বাকস্বাধীনতা থাকে না। ফলে বেকারত্ব সীমা ছাড়িয়ে যায়। জনগণকে শোষণ ও লুট করাই ছিল জয়নুল শাসকগোষ্ঠীর কাজ। মাতাল স্বভাবের স্বামী জয়নুল আবেদীন তার স্ত্রী লায়লার যেকোনো কথাকেই প্রাধান্য দিতেন। সে ছিল মূলত ‘হেয়ার ড্রেসার’। জয়নুল আবেদীনের হৃদয় জয়ের মধ্যদিয়ে এখন লায়লা দেশের ফার্স্টলেডী এবং দুর্নীতিতে দেশের সেরা। প্রেসিডেন্ট থেকে ২০ বছর কনিষ্ঠ হয়েও সে তার ওপর সওয়ারে সক্ষম হয়েছিল। ব্যাংক, মিডিয়া সেন্টার টেলিকমিউনিকেশন তারই কর্তৃত্বাধীন ছিল। কোটি কোটি ডলার তার ব্যাংক একাউন্টে। এক কথায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয়ে জয়নালস্ত্রী লায়লা ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্কোস-এর স্ত্রী এমিলদা মার্কোসের চেয়ে অনেক গুণ ঊর্ধ্বে। আইসক্রিম খাবার সখ মিটাবার জন্যে লায়লা নিজের ব্যক্তিগত বোয়িং বিমান সদা তৈরি রাখতো। প্রয়োজন হলেই ইউরোপে তার নির্ধারিত স্থান থেকে আইসক্রিম আনার জন্যে তার ঐ বিমানটি পাঠাত। জয়নুল আবেদীন ইসলাম থেকে ছিলেন বহুদূরে । ইসলামী দেশ হিসাবে আযানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে না পারলেও নারীদের হিজাবের ওপর তা আরোপ করেছিলেন। মসজিদে গোয়েন্দা বসিয়েছিলেন। ইসলামী শক্তিগুলোর প্রতি ছিল তার কড়া নজরদারি।’’
তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়া ও অন্যান্য আরব দেশের শাসকদের বিরুদ্ধে যেসব কারণে আজ গণবিস্ফোরণের আগুন প্রজ্জ্বলিত, অন্যান্য যেসব মুসলিম দেশে অভিন্ন কারণসমূহ বিদ্যমান, সেখানকার শাসকবর্গের উচিত, এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সময় থাকতে নিজেদের সংশোধন করে নেওয়া।