সিলেট ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২০
দিনরাত ডেস্ক : ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস আজ। ২০০৪ সালের এ দিনে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি)।
যা ছিল ছয় বছর ধরে এ জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ধারাবাহিক চেষ্টার এক চূড়ান্ত রূপ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত নৃশংস সহিংসতার যেসব ঘটনা ঘটেছে এ ঘটনা তার একটি।
সেদিন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতা অল্পের জন্য এ ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান দলের ২৪ জন নেতাকর্মী। এ ছাড়া এ হামলায় আরো ৪০০ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।
ভয়াবহ এ হামলা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে দিনটি ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে ও হতাহতদের স্মরণে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদবিরোধী নানা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। ২১ আগস্ট উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, ‘গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার পাশাপাশি পরমত সহিষ্ণুতা অপরিহার্য। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে সব রাজনৈতিক দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবে।’ প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রা ছিল আওয়ামী লীগের। সে সময়ে বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরপরই তা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ সেই হামলায় নিমিষে স্তব্ধ হয়ে যায় সেই কর্মসূচি।
সেদিন সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এই সমাবেশ ডাকে। সমাবেশ শেষে সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি মিছিল হওয়ার কথা ছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার এ শান্তি মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু মিছিল শুরুর আগ মুহূর্তে খোলা ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ামাত্র বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে তাকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। বিকট শব্দে একের পর এক বিস্ফোরিত হয় ১৩টি গ্রেনেড। অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। মানববর্ম রচনা করে তার জীবনরক্ষা করে প্রিয় নেত্রীকে গাড়িতে উঠিয়ে দেন তারই সহকর্মী-সহমর্মীরা। তারপরও বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ঘাতকচক্র তার গাড়ি লক্ষ্য করে ১২টি গুলি ছুড়েছিল। কিন্তু গুলিবর্ষণ থেকেও প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
এ ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার পর স্পিন্টারের আঘাতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ শত শত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। গুরুতর আহত সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান মারা যান ২৪ আগস্ট। ঘটনার দিনই শেখ হাসিনাকে আড়াল করে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে জীবন বিলিয়ে দেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ।
সেদিনের গ্রেনেড হামলায় আরও নিহত হন আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সেন্টু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), ঢাকা মহানগরের ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া বেগম, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা মমতাজ রীনা, মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মী রেজিয়া বেগম, জাতীয় শ্রমিক লীগের কর্মী নাসির উদ্দিন সর্দার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড রিকশা শ্রমিক লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হানিফ, ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন, যুবলীগ বালুঘাট ইউনিটের সভাপতি ও ক্যান্টনমেন্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি লিটন মুন্সী লিটু, ৮৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আতিক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ কর্মী ও রিরোলিং মিল ব্যবসায়ী রতন সিকদার, ছাত্রলীগ কর্মী ও সরকারি কবি নজরুল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মামুন মৃধা, জামালপুর আওয়ামী লীগ কর্মী আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ কর্মী ইছহাক মিয়া, মোঃ শামসুদ্দিন, মমিন আলী, আবুল কাসেম ও জাহেদ আলী।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (ডালিম)
মোবাঃ- ০১৭১২ ১৭ ৪৭ ৯৬
ইমেইলঃ- newssylbangla@gmail.com
রংমহল টাওয়ার ৪র্থ তলা বন্দর বাজার, সিলেট।
Design and developed by M-W-D