কুলাউড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের উপর হামলা

প্রকাশিত: ৮:৪২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০২০

কুলাউড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের উপর হামলা
  1. মাহবুব রুমেল, কুলাউড়া প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের কয়েক দফা হামলায় নিরিহ পরিবারের উপর নির্যাতন ও কুলাউড়া থানায় নির্যাতিত পরিবারকে বার বার  মামলা দিয়ে জেলহাজতে প্রেরন করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত পরিবার বারবার কুলাউড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন অভিযোগই মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি কুলাউড়া থানা। অভিযোগ রয়েছে  নির্যাতনকারীদের  মিথ্যা মামলাকে বারবারই আমলে নিচ্ছেন পুলিশ। ৫ জুলাই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে। এ ঘটনায় চরম নির্যাতিতা লিলি বেগম, মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করে সদ্য জামিনে মুক্ত হয়ে এমন অভিযোগ করেন।সাইফুল সিদ্দিকী, কুলাউড়া থানা জমাকৃত অভিযোগের কপি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পক্ষদ্বয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত জায়গা জমি নেয়ে বিরোধ চলমান ছিল। ঘটনার দিন সকাল ১১টার সময় নির্যাতিতার স্বামী সাইফুল সিদ্দেকী সহ পরিবারে সকল পুরুষ লোক বাড়ীতে না থাকার সুযোগে সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ভয়ংকর  সেলিনা বেগম তার ছেলে সাহান মিয়া,মেয়ে সামিয়া আক্তার, একই পরিবারের জাহাঙ্গির মিয়া ও তার স্ত্রী লাকি বেগম এবং মেয়ে লাবনী বেগম মিলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিতহয়ে লিলি বেগমের ঘরে অতর্কিতে আক্রমন চালায়। নির্যাতিতা লিলি বেগমের স্বামী বরমচাল বাজারের জারা ইলেকট্রনিক্সে কর্মরত সাইফুল সিদ্দিকী মোবাইল মাধ্যমে স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের নির্যাতিত হওয়ার খবর পেয়ে নিজ বাড়ীতে গিয়ে তাদের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সেখান হতেই কুলাউড়া থানার দারগা রফিকুল ইসলাম সাইফুলকে আটক করে মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করেন।

এ বিষয়ে সরেজমিনে খোজ নিয়ে এবং ফুলেরতল বাজার বনিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন ও সেক্রেটারী হেলাল খান স্মাক্ষরিত প্রত্যয়ন এবং দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হতে দেখা যায়, ঘটনার সময় সকাল ৯টা হতে ১১.২০ ঘটিকা পর্যন্ত পুলিশের হাতে আটককৃত সাইফুল সিদ্দিকী বরমচাল বাজারস্থ জারা ইলেকট্রনিক্সে কর্মরত ছিলেন। অথচ পুলশ তাকে আটক করে মামলার প্রধান আসামী সাজিয়ে কোর্টে চালান করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল বিবাদীগণের দ্বারা একই কায়দায় পরিকল্পিত হামলার স্বীকার হয়েছিলেন সাইফুল সিদ্দিকী ও তার পরিবার। ঐদিনই  সেলিনা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের আসামী করে কুলাউড়া থানায় অভিযোগও দিয়েছিলেন সাইফুল সিদ্দিকী। কিন্তু তার অভিযোগকে পুলিশ গুরুত্ব না দিয়ে ঘটনার ২৫দিন পর ৯মে তারিখে সেলিনা বেগমের মিথ্যা অভিযোগকেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করে কুলাউড়া থানা। সেলিনা বেগমের ঐ মামলার ঘটনার তারিখ ঐ ১৫ মে, কিন্তু মামলায় দাখিলকৃত চিকিৎসা সনদ অনুযায়ী তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেছেন ২৩দিন পর ৭ মে তারিখে। এছাড়া গত ১০জুন তারিখে বিবাদীগণের দ্বারা আরো এক দফা হামলা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন সাইফুল সিদ্দেকী ও সোহেল মিয়ার পরিবার। সাইফুল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা বেগম বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় অভিযোগও দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে নির্যাতিত সাইফুল সিদ্দেকী বলেন, বিবাদীদের হামলায় প্রায় মরনাপন্ন স্ত্রীর চিকিৎসা করানোর সুযোগ না দিয়ে দারগা রফিক আমাকে হাসপাতাল হতে আটক করে মিথ্যা মামলায় কোর্টে চালান করেছিলো। আমার প্রতিপক্ষের অভিযোগ পেলেই সেটিকে মামলা রেকর্ড করে আমাদের দৌড়ানু শুরু করে কিন্তু আমার কোন অভিযোগকেই পাত্তা দেয়নি পুলিশ। পুরুষ শুন্য বাড়ীতে আমার মেয়েটিও পুলিশী হয়রানী হতে রেহাই পায়নি। এক কথায় পুলিশই এখন আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। আমি মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেছি।  ইয়ারদৌস হাসান জানান,উভয় পরিবার একই পরিবারভুক্ত।

 

ঘটনা বিষয়ে বিবাদী সেলিনা বেগকে মুটো ফোনে কল দিলে তার মেয়ে ছামিয়া বেগম কল রিসিভ করে তার মা অসুস্থ এবং কথা বলতে অপারগ বলে জানান। পরে ছামিয়া বেগম বলেন, সাইফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা কয়েক দফা তাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে তাদের মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে সাইফুলদের ভয়ে আমরা বাড়ী ছেড়ে নানা বাড়ী অবস্থান করছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ