নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিভিউ মেড ইন বাংলাদেশ:

প্রকাশিত: ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২০

নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিভিউ মেড ইন বাংলাদেশ:

দিনরাত সংবাদ:
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা নীরব শক্তি

‘মেড ইন বাংলাদেশ’-এর প্রথম দৃশ্যটি শুরু হয় একজন নারীকে দিয়ে। ওই ‘ক্লোজ-আপ’ শটে দেখা যায় তিনি সেলাই মেশিন চালাচ্ছেন। ছবির শেষে যখন পর্দায় নির্মাতাদের নাম ভেসে ওঠে তখন প্রথম দৃশ্যে দেখা সেই সেলাই মেশিনের আওয়াজ ফের শোনা যায়। এমনটা হতে পারে যে, আপনি ওই শেষ দৃশ্যটির আগে টের পাবেন না, ছবিটি আপনাকে কতটা টেনে নিয়েছে- মিনিটে মিনিটে, ধাপে ধাপে শ্রমসাধ্য এক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।
রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ছবিটি নির্মিত হয়েছে ঢাকার এক গার্মেন্টস কারখানার একদল শ্রমিকদের নিয়ে। এক অগ্নিকাণ্ডে তাদের এক সহকর্মী পুড়ে মারা যাওয়ার পর তারা একটি শ্রমিক সংগঠন তৈরির চেষ্টা করে। সে চেষ্টার হাল ধরেন শিমু (রিকিতা নন্দিনী শিমু)। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জোগাড় করেন, অগোচড়ে তার কর্মস্থলের ছবি তুলেন ও কাগজপত্র আটকে না রাখতে আমলাদের তাড়া দেন।
কারখানার ম্যানেজার (আজাজ বারি) ও শিমুর ফ্লোরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা (শতাব্দী ওয়াদুদ)- নারীদের মজুরি আটকে রাখা বা তাদের ফ্যানবিহীন গরম কারখানায় ঘুমাতে বাধ্য করাকে কিছু মনে করেন না। শ্রমিক সংগঠন আটকাতে প্রতি মোড়ে চেষ্টা চালিয়ে যান তারা।

ছবির বেশিরভাগ জুড়েই শিমুর পুরুষতান্ত্রিক স্বামীও (মোস্তফা মনোয়ার) ওই ম্যানেজার ও ফ্লোর বসের মতোই আচরণ করেন। যদিও ছবির শুরুতে তিনি বেকার ছিলেন। এসবের কোনোকিছুরই অন্তর্নিহিত কোনো অর্থ নেই। ছবির বেশিরভাগ ডায়লগই সোজাসাপটা। শ্রমিক সংগঠন তৈরির চেষ্টায় কারখানার নারীরা যখন বাংলাদেশের শ্রম নীতি সম্পর্কে শেখেন। তাদের আইনজীবী (শাহানা গোস্বামী) তাদের বুঝিয়ে বলে, তাদের তৈরি শার্টগুলোর মূল্য কত। সাধারণত নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকা পোশাককর্মীদের সেসব বিষয় ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলতে হয়। কিন্তু কিছু জায়গায় মনে হয় যে, ওই ব্যাখ্যাগুলো দর্শকদের জন্য দেওয়া ও অপ্রয়োজনীয়। তবু, শিমুর চেষ্টা জোরদার হয়। যত সময় বাড়তে থাকে ততই মনে হতে থাকে, সে চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নীরব এক শক্তি অর্জন করে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। তবে হলে বসে নয়, সিনেমা হলের টিকেট কাটলে ভার্চুয়ালি ছবিটি দেখতে পাবেন দর্শকরা। এর আগে, টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের পর ছবিটির ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ার হয় বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে। এছাড়াও বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে ছবিটি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ