মানিকপীর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় ‘জনতার কামরান’

প্রকাশিত: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২০

মানিকপীর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় ‘জনতার কামরান’

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট নগরীর মানিকপীর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সিলেট সিলেট সিটি র্কপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। সোমবার (১৫ জুন) দুপুর আড়াইটায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে কামরানের অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী তাকে মা-বাবার পাশে সমাহিত করা হয়।

বাদ জোহর ছড়ারপাড় জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কামরান এই মসজিদের মোতাওয়াল্লি ছিলেন। জানাযায় ইমামতি করেন বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ভাইয়ের ছেলে ইমতিয়াজ আহমদ আবদাল। তার প্রথম জানাযায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ নেতাকর্মীরা শরিক হন। প্রথম জানাজার পর দ্বিতীয় জানাজার জন্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের লাশ মানিকপীর কবরস্থানে নেয়া হয়।

সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ জনসমাগম ছাড়াই দাফন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ‘জনতার কামরানের’ জানাজার ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনা-ভয় কিছুই কাজে আসেনি। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে জানাজায় ঢল নামে মানুষের। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মী সহ সাধারণ মানুষ জড়ো হন মানিকপীর কবরস্থানে।

জানাযায় অংশ নেন সিলেটের জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। জানাযার নামাজ শেষে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাবেক এই মেয়রের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

এর আগে সাড়ে ১২টার দিকে কামরানের মরদেহ ছড়ারপাড়স্থ তাঁর নিজ বাসভবনের সামনে পৌঁছায়। যখন কামরানকে বহনকারী লাশবাহি গাড়িটি তাঁর বাসভবনে প্রবেশ করে তখন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। এসময় করোনার ভয় উপেক্ষা করেও তাঁর বাসার সামনে জড়ো হন অসংখ্য নেতাকর্মীরা। কামরানের মরদেহ আসার সাথে সাথে এলাকাজুড়ে কান্নার রুল শুরু হয়।

অপরদিকে কামরানের মরদেহ আসার আগে থেকেই সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনসমাগম না করতে পুলিশের পক্ষ থেকে কাজ করা হয়।

প্রসঙ্গত, রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সোমবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে কামরানের মরদেহ নিয়ে সিলেটের পথে রওনা হন তার পরিবারের সদস্যরা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তার ছড়ারপাড়স্থ বাসায় এসে লাশ পৌঁছায়। লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স বাড়ির ফটকে এলে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের টানা দুবারের মেয়র কামরান গত ৫ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। পর দিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পর তার শরীর আরও খারাপ হলে ৭ জুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৮ জুন কামরানের শরীরে প্লাজমা থেরাপিও দেয়া হয়েছিল।

তবে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সোমবার ভোরে মারা যান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক এ সভাপতি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ