সীমান্তে মিয়ানমার সেনা: বাংলাদেশও প্রস্তুত

প্রকাশিত: ৩:০৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০

সীমান্তে মিয়ানমার সেনা: বাংলাদেশও প্রস্তুত

দৈনিক সিলেটের দিনরাত:
,

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমার সেনা শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রাখার প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ঢাকা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। একাধিক সরকারি সূত্রে এ কথা জানা গেছে।

পাশাপাশি তারা এ কথাও বলেছেন যে, ২০১৭ সালের মতো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিতে মিয়ানমারের যেকোন অপচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।

সূত্রগুলো জানায়, রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে সেনাবাহিনীর যে সংঘর্ষ চলছে সে কারণে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সেনা সমাবেশ ঘটানো হতে পরে। রাখাইন রাজ্যে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র লড়াই করছে এএ।

তবে সূত্রগুলো বলেন, সেনা মোতায়েন একই সঙ্গে অশান্তি ও উপদ্রব। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিশ্বাস করার যায় না। তাই ২০১৭ সালের মতো যেকোন পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশ সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তখন মিয়ানমার বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস শুদ্ধি অভিযান শুরু করলে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

বিজিবি’র পতাকা বৈঠকের আহ্বান

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৪তম ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ এই পত্রিকাকে বলেন, সীমান্তের কাছে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। আমরা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছি।

তিনি বলেন, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বা অন্যকিছু হোক না কেন, পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত।

লে. কর্নেল আজাদ আরো বলেন, সীমান্তের ওপারে ঠিক কি ঘটছে তা জানার জন্য আমরা পতাকা বৈঠক ডেকেছি। মিয়ানমার পক্ষ এখনো এ ব্যাপারে কোন জবাব দেয়নি।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের আগস্টের মতো মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করতে বিজিবি প্রস্তুত। এখন পর্যন্ত উদ্বেগের কোন কারণ ঘটেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত কিছু জানেন না

বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমাদের তরফ থেকে প্রস্তুতি রয়েছে। যেসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তার সব সঙ্গত কারণেই বলা যাচ্ছে না।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রোববার মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তলব প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা বলেন: দূত কিছু বলতে পারেননি। তাকে বলা হয়েছে সীমান্তে সেনা সমাবেশ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছে দিতে। তিনি তা করবেন বলে জানিয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে কর্মকর্তাটি বলেন: এই মাপের সেনা সমাগম যখনই ঘটবে তার পেছনে অবশ্যই কারণ থাকবে। সম্ভবত এটা অভ্যন্তরীণ কারণে। কিন্তু যেহেতু দেশটি মিয়ানমার তাই আমরা তাদের উপর কড়া নজর রাখছি এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিশ্বাস করা যায় না

দুই সিনিয়র কর্মকর্তার মতে, মিয়ানমারের রাখাইন ও চিন রাজ্যে চলমান লড়াইয়ের কারণে এই সেনা মোতায়েন হতে পারে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী নেপিদোকে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই।

তাই সীমান্তে মিয়ানমারের যেকোন অপতৎপরতা রুখে দিতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

সঙ্গত কারণে এসব ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলা যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তারা।

Source ঢাকা ট্রিবিউন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ