সিলেটের চার খলিফার তিন জন চলে গেলেন

প্রকাশিত: ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২০

সিলেটের চার খলিফার তিন জন চলে গেলেন

রিপি আক্তার মিতুঃ বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, আ ন ম শফিকুল হক,  এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও ইফতেখার হোসেন শামীম। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সিলেটের চার নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করেন। ওই চার নেতা হলেন সে সময়ের সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ন ম শফিকুল, সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার হোসেন শামীম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

নির্বাচনে পরজায় ও সিলেটের সার্বিক পরিস্থিতি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরেন ওই চার নেতা। জননেত্রী এই চার নেতাকে সিলেটের চার খলিফা আখ্যা দিয়ে সিলেটে দলকে সুসংগঠিত করার নির্দেশনা দিয়ে দেন। সেই থেকে ওই চার নেতাকে সিলেটের মানুষ চার খলিফা হিসেবে চিনতেন।

চার খলিফার তিন খলিফা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এই তিন খলিফা হলেন আ ন ম শফিকুল হক, ইফতেখার হোসেন শামীম ও বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।

চার খলিফার মধ্যে ইফতেখার হোসেন শামীম ২০১২ সালের ১১ মে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। সে সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা শামীম সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। এই দুর্ঘটনায় ইফতেখার হোসেন শামীমের স্ত্রীও মারাত্মকভাবে আহত হন। আজো তিনি দুর্ঘটনার ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছেন। এই দুর্ঘটনায় তাদের মেয়ে সেজিনা হোসেনও আহত হয়েছিলেন।

চার খলিফার মধ্যে ২০০১ সালের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ন ম শফিকুল হক ২০১৯ সালের ১৩ আগস্ট সিলেট নগরীর একটি বেসরকারির হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ছিলেন। আ. ন. ম. শফিকুল হক দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন। এর আগে তিনি ভারতে গিয়ে লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে এসেছিলেন। তার বয়স হয়েছিলো ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।

সর্বশেষ চার খলিফার আরেক খলিফা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মৃত্যুবরণ করেন। রোববার (১৪ জুন) দিনগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। ৫ জুন সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে কামরানের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ওইদিন রাত থেকে প্রথমে বাসায় আইসোলেশনে রাখা হলেও ৬ জুন সকালে বমি আর জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বমি ও জ্বর কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। পরে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়াতে রোববার (৭ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।

চার খলিফার মধ্যে বেঁচে রইলেন এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তিনি ২০০১ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিনবারের সফল সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক কুটচালে তিনি এখন পদবী শূন্য। তবে আছেন রাজনৈতিক মাঠে। ১৫ জুন তিনি রাজনৈতিক সহকর্মী বদর উদ্দিন কামরানকে শেষ বিদায় দিয়েছেন চোখের জলে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ