সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাস থাবা দিয়েছে। বাংলাদেশের লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের ঘরে খাবার নেই। এসব পরিবারে খাবার যোগান দিতে শুরু করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনার আহ্বানে সারা দিয়ে এগিয়ে এসেছেন রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে থানা আওমী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সায়েম শাহীন ও তার পরিবার।

মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন ওই কার্যক্রম। এ পর্যন্ত তিনি ২০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। যার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন এক লাখ কর্মহীন মানুষ।

ওই কার্যক্রম পরিচালনা জন্যে তিনি “মানুষের পাশে মানুষ“ ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে প্রায় লাখো মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এবং তাদের পরিবারে পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন সোশ্যাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “মানুষের পাশে মানুষ“।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে নিজ এলাকায় করোনার কারণে বেকার হয়ে পড়া, ছিন্নমূল, সুবিধাবঞ্চিত, ভবঘুরে, ভিক্ষুক ও সমাজের অন্যান্য স্তরর সংকটাপন্ন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের পাশে দাঁড়ান মোহাম্মদপুরে থানা আওমী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সায়েম শাহীন ও তার পরিবার।

মানবতার ডাকে মানুষের দুয়ারে ছুটে যাওয়া আবু সায়েম শাহীনের সাথে কথা হয় খেলামেলাভাবে। তিনি বলেন, করোনা সংকটের শুরুতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মানুষের পাশে মানুষ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়, সংকটাপন্ন মানুষকে সহায়তা করার জন্য। যাতে করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেকোনো প্রান্তে থাকা মানুষকে এই সহায়তার আওতায় আনা যায়। এই গ্রুপের মাধ্যমে মূলত বিভিন্ন স্থানে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ পাঠানো হচ্ছে।

শুরুতে মোহাম্মাদপুর এলাকা ছাড়াও মোহাম্মাদপুর সংলগ্ন ও আশপাশের এলাকাতে এই সহায়তা প্রদান শুরু করি। আত্মীয়স্বজন, পাড়া মহল্লার সহকর্মীদের নিয়ে কর্মহীন মানুষের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেই। প্রতিবেশি ও পরিচিত অনেকেই ফোন করে সহযোগিতার জন্য।

বিভিন্ন এলাকায় মানুষের হৃদয় বিদারক কষ্ট গুলো শুনেছি বা দেখেছি। ওই হৃদয় বিদারক দৃশ্যের কারণে, সেবার পরিধি কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা শুরু করি পরিবারের সাথে। বিশেষ করে আমার সহধর্মিনী ও আত্মীয়স্বজনসহ বেশির ভাগ মানুষ আমাকে সাধুবাদ ও উৎসাহ করে মানুষের পাশে থাকার জন্য।

তিনি বলেন, একটি স্ট্যাটাস দেই নিজের ফেইসবুকে। যারা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার নিজেদের অসচ্ছল অবস্থান প্রকাশে সংকোচবোধ করছেন, তাদের জন্যে ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলেছি ‘মানুষের পাশে মানুষ‘। এর মাধ্যমে পরিচয় গোপন রেখে সেবা করে চলেছি। সে জন্য সৃষ্টিকর্তা কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি যেন আমাকে আরো বেশি মানুষের পাশে থাকার তৌফিক দেন। ধন্যবাদ দিচ্ছি তাদের, যারা অসহায় পরিবারের মাঝে সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন। যারা মূলত কারো কাছে সাহায্য চাইতে পারছেন না এমন পরিবারকে এই সহায়তার আওতায় আনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার পরিবারের হাতে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিয়েছি। এতে উপকৃত হয়েছেন লাখো মানুষ। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও রমজানের উপহার সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। ধারাবাহিকভাবে এই খাদ্য সামগ্রী সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

তিনি বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা প্রতিবেশী ও অসহায় মানুষের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেই। দানে কখনো ধন কমে না। সৃষ্টিকর্তা বরকত বাড়িয়ে দেন। জয় হোক মানবতার। জয় হোক মানুষের পাশে মানুষের সহযোগিতার ।