দুই-তিন দিন ধরে সিলেটে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। কিছু সময়ের জন্য থামলেও পরক্ষণেই প্রবল বেগে নেমে আসছে আকাশের বারিধারা। সেই বারিধারা থামার কোনো ‘সুসংবাদ’ নেই আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণে। বরঞ্চ, কাল রবিবার আরো বেশি বৃষ্টি হওয়ার ‘দুঃসংবাদ’ দিয়েছে তাঁরা।

এমতাবস্থায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে শঙ্কায় সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১০৭ মিলিমিটার!

অব্যাহত বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাটের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। দ্রুত বাড়ছে সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, লোভা নদীর পানি। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ০.৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

আর সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ০.১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবো জানায়, সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টেও বেড়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে আমলশিদ ও শেওলা উভয় পয়েন্টে। পানি বেড়েছে লোভা নদীতেও।

এমতাবস্থায় সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ রাতেও বৃষ্টি হবে প্রচুর। আর আজ দিনের চেয়ে কাল রবিবার দিনে বৃষ্টি হবে বেশি।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী ‘গত রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ১০৭ মিলিমিটার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি। আজ দিনেও ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। আর কাল দিনে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।’

একদিকে সিলেটে অব্যাহত বৃষ্টি, অন্যদিকে উজান থেকে নেমে আসছে ঢল। দুইয়ে মিলে সিলেটে বন্যার শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে।

আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী  বলছিলেন, ‘এখন মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সিলেটে বৃষ্টি হবেই। জুনে সিলেটে সাধারণত ৮১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। কিন্তু এবার জুনে এখন পর্যন্ত হয়েছে ৫৫৮ মিলিমিটার। মাসের বাকি কয়দিন তাই বৃষ্টি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস আছে। ভারতের মেঘালয় আর আসামের দিকেও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। সেখান থেকে নেমে আসছে ঢল। যা সিলেটে বন্যার শঙ্কা জাগাচ্ছে।’

পাউবো কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তাঁদের প্রস্তুতি আছে।

যেমনটি  বলছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি আছে। যদি জরুরি প্রয়োজন হয়, আমরা সাড়া দিতে পারবো।’