ডাক্তার সায়েফের স্বপ্নের ভাটেরা জেনারেল হাসপাতাল

প্রকাশিত: ৮:২৪ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২১

দিনরাত ডেস্ক ঃ শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস- ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকির পশ্চিম তীরবর্তী ভাটেরায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সিলেট কুলাউড়া মহাসড়েকের পাশে ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৩৫ শতক জায়গার উপরে চিকিৎসায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা সম্বলিত ১০ তলা ভবন বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে। ‘ভাটেরা জেনারেল হাসপাতাল’ নামে এ হাসপাতালের মূল উদ্যোগ গ্রহনকারী ও অর্থায়নকারী হলেন ঐ এলাকারই কৃতি সন্তান বর্তমানে কানাডা প্রবাসী ডাক্তার সায়েফ আহমদ।

মানব সেবার মহান ব্রত নিয়ে ভাটেরা সহ বৃহত্তর সিলেট এবং বাংলাদেশের সর্বসাধারণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরার লক্ষ্যে একটি চ্যারিটাবল অলাভজনক হসপিটাল হিসাবে যুগান্তকারী যাত্রা শুরু করেছে ভাটেরা জেনারেল হাপপাতাল। যার ১০ তলা ফাউন্ডেশন সম্বলিত স্ট্রাকচারাল ডিজাইন কনস্ট্রাকশন ফার্ম ’দি ইঞ্জিনিয়ার এসাসিয়েট্স’ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডাক্তার সায়েফ আহমদ প্রতিষ্টিত ও পরিচালিত সিলেট আলবান্না জেনারেল হাসপাতাল ও মডার্ন ডায়গনিক সেন্টার নামক প্রতিষ্ঠান দুটি ইতোপূর্বে সিলেট সহ পুরো দেশে অনেক সুনাম অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান ছিল।

জানা গেছে ভাটেরাসহ সিলেট মৌলভীবাজারের আগ্রহী অর্থায়নকারীদের সদকায়ে জারিয়া হিসেবে প্রদত্ত অর্থে একটি অনুমোদিত ট্রাস্টের মাধ্যমেই এ হাসপাতালটি নির্মিত ও পরিচালিত হবে। যেহেতু এটি একটি অলাভজনক এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ফলে এখানে ভূমি দাতা বা নগদ অর্থায়নকারীদের আর্থিক লাভমান হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থা সহ নিয়মিত বহির্বিভাগে ও ভর্তিকৃত রোগীকে নিজস্ব ডাক্তার দ্বারা সেবার ব্যবস্থা থাকবে হাসপাতালটিতে। সর্বোচ্চ আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ একসাথে তিনটি অপারেশনের সক্ষমতার দুটি অপরেশন থিয়েটার থাকবে, পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য অত্যাধুনিক ডায়গনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্টিত হবে যেখানে কম্পিউটারাইজড এক্সরে, প্যাথলজি, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম,ইকোকার্ডিওগ্রাফি,ইটিটিসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা হবে। হাসপাতালের কেবিনগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই ও সাকার মেশিনের ব্যবস্থা থাকবে। উন্নত বিশ্বের প্রতিটি রোগীর ডাটা ইমপোর্ট করার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত রোগীর স্বজনদের অনলাইনের মাধ্যমে রোগের তত্ব প্রাপ্তি সুবিধার্থে সমস্ত হাসপাতালকে কম্পিউটার নেটওয়াকিং এর মাধ্যমে সাজানো হবে। মেডিসিন, সার্জারি, নাক-কান-গলা,গাইনি, চক্ষু,মা ও শিশু, হাড় জোড়া এবং ইমারজেন্সি বিভাগ সহ চিকিৎসার সকল বিভাগ থকেবে এখানে । লাশ সংরক্ষনাগারের সুবিধা এবং সার্বক্ষনিক এম্বুলেন্স সার্বিসের ব্যবস্থা থাকবে। একটি ফ্লোরকে আইসিইউ-সিসিইউ ও ডায়ালাইসিসের জন্য সংরক্ষণ করা হবে যাতে ভবিষ্যতে মেশিনসমুহ সংযোজন করা যায়।

হাসপাতালের আর্থিক স্বচ্চতা নিশ্চিতের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সদস্যরা হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি শেখ রাজা মিয়া তালুকদার,যুক্তরাজ্য প্রবাসি সাইফুর রহমান সুমন, কানাডা প্রবাসি আহমদ সামিন জাওয়াদ, ডাঃ আহমদ আল আমিন ও আহমদ আল-হাদী।

এদিকে প্রাচীন ঐতিহাসিক জনপদ ভাটেরায় বড় শহর গুলোর সমান সুবিধা সম্বলিত ১০তলা বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক বিশাল হাসপাতাল কুলাউড়ার ভাটেরায় নির্মিত হচ্ছে এ খবর বেশ কিছুদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাজানি হলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়, বিশেষ করে ভাটেরায় সর্বস্তরের জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উচ্চাস লক্ষ্য করা গেছে। ভাটেরায় এরকম উন্নত মানের একটি হাসপাতাল নির্মিত হলে পুরো কুলাউড়ায় চিকিৎসা সেবায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে জনসাধারনের বিশ্বাস।

হাসপাতালের স্বপ্নদ্রষ্টাও মূল অর্থায়নকারী ডাঃ সায়েফ আহমদ বলেন, আমরা আশা করি ’ভাটেরা চ্যারিটি জেনারেল হাসপাতাল’ হবে আগামী সারা বাংলাদেশের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। দেশে বিদেশে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশী ভাইবোনদের কাছে আমাদের আকুল আবেদন,এই প্রতিষ্ঠানে মুক্ত হস্তে দান করে সাদাকায়ে জারিয়ার সওয়াব হাসিল করুন এবং মানবতার কল্যাণে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ার জন্য আপনাদের সর্বাত্বক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। আল্লাহ আমাদের প্রচেষ্ঠাকে কবুল করেন, আমিন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ