দিনরাত ডেস্কঃ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে টিকা সংগ্রহ দেশের জনগণের প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের ডিপ অ্যান্ড এবাইডিং কমিটমেন্টের (গভীর এবং অবশ্য পালনীয় প্রতিজ্ঞার) সুস্পষ্ট প্রতিফলন।
সোমবার (৫ জুলাই) সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।
করোনার টিকা নিয়ে বিএনপির অপরাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যে দেশে এসেছে প্রায় ৪৫ লাখ ডোজ টিকা। সময় মতো আরও টিকা আসবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক দক্ষতা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা সংগ্রহে বাংলাদেশ সফল হবে ইনশাআল্লাহ।’
দেশে অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘হয়তো কোথাও সমন্বয়ের অভাব হতে পারে, তবে যেসব এলাকায় অক্সিজেন সরবরাহ জরুরি সেসব এলাকায় সমন্বয় জোরদারের মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।’
সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রোধে ঘরে ঘরে সচেতনতার দুর্গ গড়ে তোলার বিকল্প নেই উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জীবনের প্রয়োজনে, বেঁচে থাকার জন্য হলেও আমরা যেন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করি।’
সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় সংসদের ১৩তম অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যে বিএনপির সমালোচনার জবাবে কাদের বলেন, ‘বিএনপির এই সমালোচনা বরাবরের মতো দীপ্যমান সত্যকে অস্বীকার করার কসরত মাত্র।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ঢালাওভাবে মন্তব্য করলেও সংসদ নেতার কোন বক্তব্যটি অসত্য তা স্পষ্টভাবে বলতে পারেনি, প্রকৃতপক্ষে সংসদ নেতার ভাষণ ছিল ইতিহাসের কঠিন সত্যপাঠ।’
যারা মিথ্যার ওপর আশ্রয় নিয়ে ও মিথ্যায় ভর করে রাজনীতি করে, সত্য প্রকাশিত হলে বিএনপির গাত্রদাহ হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশের রাজনীতিকে ষড়যন্ত্র, হত্যা আর অগণতান্ত্রিক পথে চালনাকারী বিএনপি কখনো সত্য মেনে নিতে পারে না মনে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সত্য ও সঠিক ইতিহাস তুলে ধরলে ইতিহাস বিকৃতির জনকদের মর্মজ্বালা বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।’
বিএনপির নির্বাচনের নামে প্রহসন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অনিয়ম আর দুর্নীতির মাত্রাহীন নিমজ্জন এদেশে রেকর্ড হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতারা ভুলে গেছেন বেগম জিয়া একজন দণ্ডিত আসামি, মাসের পর মাস অযথা সময় ক্ষেপণ করে বিএনপিইতো বেগম জিয়ার মামলার বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে।’
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করা মামলাটি যদি মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে বিএনপির আইনজীবীরা তা প্রমাণ করতে পারলেন না কেন?’
ওবায়দুল কাদের বেগম জিয়ার মামলা, কারামুক্তি এবং চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতারা এক ধরনের রহস্যময় খেলা খেলছেন বলে মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশ্যে বেগম জিয়ার বিষয়ে বলেন, ‘দায় কেন সরকার নেবে? বেগম জিয়াকে আপনারা নিজ নিজ পদরক্ষার জন্য দাবার গুটি বানাবেন আর দায় নেবে সরকার, তা হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম জিয়ার বিষয়ে অধিকতর মানবিক আচরণ করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় সাজা স্থগিত করে তাকে ঘরে অবস্থান করে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তাই শেখ হাসিনার ঔদার্য্যের প্রতি আপনাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ‘
বেগম জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাজানো মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে, বিএনপি নেতাদের এ ধরনের কল্পিত অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ভালো করেই জানেন এ মামলা শেখ হাসিনা সরকার করেনি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করা এই মামলা।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কোনো বিষয় নয় এখানে।’
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নয় বরং বিএনপিই এদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির পথপ্রদর্শক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনীতি বা দেশ পরিচালনায় ওয়ার্কিং রিলেশন থাকাটা জরুরি, তাইতো শেখ হাসিনা কষ্ট চেপে বারবার উদারতার হাত বাড়িয়েছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা দরজা বন্ধ করে গুটিয়ে ছিলেন দেয়ালের আড়ালে, পর্দার আড়ালের রাজনীতিই আপনাদের পছন্দের ‘
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মনে করেন, নেতিবাচকতার দাবানল বিএনপির রাজনীতিকে পত্র-পুষ্পহীন মরুময়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।