জগন্নাথপুর পৌর সভার উপ-নির্বাচন আমেজহীন

প্রকাশিত: ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০

জগন্নাথপুর পৌর সভার উপ-নির্বাচন আমেজহীন

দৈনিক সিলেটের দিনরা,
মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ


আর মাত্র কয়েক দিন পর চলতি সনের ১০ ই অক্টোবর জগন্নাথপুর পৌর সভার উপ-নির্বাচন। হটাৎ করে এই পৌর সভার নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা পড়েছেন বেকায়দা। নির্বাচন ঘোষনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও প্রার্থীরা এখনো সরাসরি যেতে পারেননি ভোটারদের দোরগোড়ায়। মাত্র দুই মাসের জন্য এই নির্বাচনের আয়োজন হওয়ায় পৌরবাসীর মাঝে নেই কোন নির্বাচনী আমেজ। আগ্রহহীন ভোটারগন।
জানাযায়,বিগত ২০১৫ সালে জগন্নাথপুর পৌর সভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ এর মনোনীত প্রার্থী হিসাবে আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মনাফ মেয়র নির্বাচিত হন। চলতি বছরের ১১ ই জানুয়ারী মেয়র আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল আবদুল মনাফ মৃত্যু বরণ করলে ফেব্রুয়ারী মাসে জগন্নাথপুর পৌর সভার উপ নির্বাচন এর তফশিল ঘোষনা করে ২৯ মার্চ ভোটগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ২৭ ফেব্রুয়ারী মনোময়ন পত্র দাখিল ৮ মার্চ প্রত্যাহারের দিন ধার্য করা হলে চারজন প্রার্থী সর্বশেষ ভোটযুদ্ধে প্রচারণায় নামেন। প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া (নৌকা) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রাজু আহমেদ (ধানের শীষ) আওয়ামী লীগ এর বিদ্রোহী প্রার্থী প্রয়াত মেয়র আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মনাফ এর ছেলে আবুল হোসেন ওরফে সেলিম (জগ) ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান (মোবাইল ফোন) প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে প্রচারণায় নামেন। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতির পর মরনব্যাধী করেনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২১ শে মার্চ নির্বাচন কমিশনার জগন্নাথপুর পৌর সভার মেয়র পদে উপ-নির্বাচন স্থগিত ঘোষনা করে। নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা হতেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রাজু আহমেদ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রয়াত মেয়র পুত্র আবুল হোসেন সেলিম লন্ডনে চলে যান। আর বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান চলে যান ঢাকায়। একমাত্র আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া এলাকায় থাকলেও তিনি গত কয়েক মাস ধরে পা ভেঙে অসুস্থ অবস্থায় আছেন। নির্বাচন ঘোষণার পর পর পৌর আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় তিনি যোগদান করে নৌকার পক্ষে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। কিন্তুু পা ভাঙা থাকার কারণে সরাসরি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে পারছেন না।তবে দলীয় নেতাকর্মী ও কর্মী সমর্থকরা তার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রাজু আহমদ এখনো দেশে ফিরতে পারেন নি। সমর্থকরা জানিয়েছেন তিনি দ্রুত দেশে ফিরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হোসেন সেলিম লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেও পারিবারিক নানা ব্যস্ততায় সিলেট শহরে অবস্থান করছেন। তিনি এখনো ভোটারদের কাছে আসতে পারেননি। ঠিক একইভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান ঢাকা থেকে জগন্নাথপুর এসে এখনো প্রচারণায় নামেননি। তবে সহসাই মাঠে নামবেন বলে সমর্থকরা জানিয়েছেন। চলতি সনের আগামী ১০ ই অক্টোবর আকস্মিক নির্বাচন ঘোষণা করায় প্রার্থীরা পড়েছেন বেকায়দায়। পৌরবাসীর মাঝে নেই নির্বাচনী আমেজ। কেবল মেয়র পদের প্রার্থীদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা।
জগন্নাথপুর পৌর এলাকার একাধিক ভোটার তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, মাত্র দুই মাসের জন্য ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করে লাভ কি। পছন্দের প্রার্থীর পিছনে দৌড় -ঝাপ দিয়ে সময় নষ্ট করে কি হবে। সময় বেড় করতে পারলে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ২ এর অধিশাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান সাক্ষরিত একপত্রে স্থগিত হওয়া জগন্নাথপুর পৌরসভাসহ দেশের ৫টি পৌরসভার উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষনা করা হয়েছে। এসব তথ্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে। আগামী ১০ ই অক্টোবর জগন্নাথপুর পৌরসভার উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ