জাফলংয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে শ্রমিকরা আন্দোলনে

প্রকাশিত: ১:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০২০

জাফলংয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে শ্রমিকরা আন্দোলনে

আদালতের আদেশ অমান্য করে এবং ইসিএ কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একটি প্রভাবশালী গ্রুপ ডাউকী জাফলং নদীর ব্রীজ এর আশ-পাশে বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলণ অব্যাহত রয়েছে। ম্যানুয়েল পদ্ধতীতে বালু উত্তোলনের দাবীতে মানব বন্ধনসহ প্রতিবাদে ফুসে উঠেছেন স্থানীয় শ্রমিক-জনতা।
গতকাল ৮ জুলাই বুধবার সকাল ১১টায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং নদী এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের কথিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে প্রভাবশালীরা শত শত নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। তাছাড়া যে সকল শ্রমিক ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে বালু উত্তোলণ করেন তাদের কাছ থেকে সরকারী রাজস্বের নামে চাদা আদায় করছে একটি সিন্ডিকেট। স্থানীয় শ্রমিকদের সাথে আলাপকালে তারা জানায় প্রতিদিন নৌকা প্রতি ৫০০/১০০০ টাকা দিতে হয় সিন্ডিকেট সদস্য সুভাস দাশ, সুমন, রাসেল ও মুজিবুর রহমান মুজিব এর নামে। যারা টাকা দিতে রাজি নয় তাদের নৌকা পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়, এমনকি বালু উত্তোলনে তাদেরকে বাধা প্রদান সহ শ্রমিকদের মারধর করা হয়। এব্যাপারে স্থানীয় মুরব্বী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুবশ্বির আলী মুবই বলেন সুভাস আমাকে ফোন করে বলে আমি যেনো বোমা মেশিন বন্ধে কোন প্রতিবাদ না করি, বিনিময়ে আমাকে এককালীন ১লক্ষ এবং প্রতিদিন আরো টাকা আমার বাড়ীতে পৌছে দেওয়া হবে। এরই প্রতিবাদে জাফলং বালু উত্তোলন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে জাফলং নদীর মোহনায় মানব বন্ধন পালিত হয়। জাফলংয়ের বিশিষ্ট মুরব্বী আইয়ুব আলীর সভাপত্তিত্বে ও নাজিম আহমদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ১৭পরগনার শালিষ ব্যক্তিত্ব জাফলংয়ের বিশিষ্ট মুরব্বী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুবশ্বির আলী মুবই, বক্তব্য রাখেন ফজলুল হক, লেবু মিয়া, আতাউর রহমান, নয়ন মিয়া, ইসমাইল হোসেন, নাছির আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা বাবলু মিয়া, ইসরাইল হোসেন, রুস্তুম আলী, আব্দুল আলী, বিলাল হোসেন, সাহেব আলী, শাসছুল হক প্রমুখ।
বক্তরা বলেন আমরা গত ৫ জুলাই গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত আবেদন করি। যার অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিক সম্পদ মন্ত্রনালয়, প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়, জেলা প্রশাসক সিলেট, পুলিশ সুপার সিলেট, গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোয়াইনঘাট, ৩নং পূর্ব জাফলং ইউপির চেয়ারম্যানের কাছে অনুলিপি প্রেরণ করেছি। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকায় নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করে গেলেও জায়লং ব্রীজ, চা-বাগান, নয়াবস্তি, কন্দুবস্তি, মন্দিরের জুম, শ্বশানঘাট, বাংলা বাজার, নয়া বাজার এলাকা হতে ভলগেট এবং বোমা মেশিন দিয়ে শ্রমিকদের পেটে লাথি দিয়ে প্রভাবশালীরা চাঁদার বিনিময়ে বোমা মেশিন চালিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জাফলংয়ের ডাউকী নদীর হতে বোমা মেশিন অপসারণ করে সনাতন পদ্ধতীতে বালু আহরনের দাবী জানান। অন্যতায় তারা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন।
এব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিব’র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন আমরা টাস্কফোর্স এর মাধ্যমে এখন অভিযান পরিচালনা করতেছি এবং থানা পুলিশকে ব্যাস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ