দোয়ারাবাজার বিআরডিবি’র ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০

দোয়ারাবাজার বিআরডিবি’র ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার :
বিআরডিবি’র সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, অনিয়ম ও ব্যক্তি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, শাহীনুর রহমান ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর প্রথম দফায় দোয়ারাবাজার উপজেলায় পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্পে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এর প্রায় এক বছরের মাথায় ২০০৮ সালের ৩ মার্চ অন্যত্র বদলি হন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি পুনরায় বিআরডিবি’র দোয়ারাবাজার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দিয়েছেন শাহীনুর রহমান।

অভিযোগ রয়েছে, দ্বিতীয় দফা যোগদানের পর থেকে এখনোব্দি প্রায় ৪ বছর ধরে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় কতিপয় বখাটে যুবকদের যোগসাজশে দোয়ারাবাজার বিআরডিবি’র অফিসে ঘুষের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন শাহীনুর রহমান। ঘুষ ছাড়া মিলছেনা ঋণ। এলাকাব্যাপী রয়েছে তার সুদের ব্যবসার বিশাল নেটওয়ার্ক। দারিদ্র্যতার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে অফিসের কলিগ থেকে শুরু করে অনেক সাধারণ মানুষকে চড়া সুদে ঋন দিয়ে জিম্মি করে রেখেছেন তিনি। উপজেলা সদরের মুরাদপুর সমিতি নিয়েও রয়েছে তার নানান গাফিলতি।

সরেজমিনে অনুুুসন্ধানে গিয়ে মুরাদ পুর সমিতির সদস্যদের সাথে আলাপ করে জান যায়, বেশিরভাগ সদস্যই ঋণের বিষয়ে জানেননা কিছুই। প্রায় একবছর পেরিয়ে গেলেও আজোবধি সমিতির অনেক সদস্য-ই পাননি পাশ বই। নিয়মের বাইরে প্রায় এক বছর ধরে পাশবই ছাড়াই চলছে সমিতির লেনদেন। সমিতির নতুন সদস্যদের অভিযোগ তারা এখন পর্যন্ত পাশবই পাননি, এমনকি তাদের শেয়ার সঞ্চয়ও জমা হয়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায়, মুরাদপুর সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজারের সাক্ষর ছাড়াই ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে মুরাদপুর সমিতির বকেয়া পরিশোধ বাবদ অসাধু পন্থায় সমিতির ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিআরডিবি’র উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে, শাহীনুর সারাবছর এমনভাবে সব সমিতিতে রিকভারী ১০% টাকা হারে করে থাকেন এবং পরবর্তীতে অন্যের নাম নিয়ে বিভিন্ন সমিতি থেকে টাকা উত্তোলন করে নিজের পকেট ভর্তি করেন। শুধু মুরাদপুর সমিতি নয়, উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের নোয়াগাঁও সমিতির সদস্যরাও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। জানা যায়, নোয়াগাঁও সমিতির এক সদস্য জমির হোসেনের স্ত্রী সমরুন মারা যাওয়ার পর তার পরিশোধ কৃত নয় হাজার টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তা শাহীনুর।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরডিবি’র দোয়ারাবাজার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান তার উপর আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সকল অভিযোগ মিথ্যা। এমনিতেই এসব অহেতুক অভিযোগ করা হয়েছে।’
তবে সমিতির নতুন সদস্যদের পাশবই ও নোয়াগাঁও সমিতির মৃত ব্যক্তির পরিশোধ কৃত নয় হাজার টাকার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি। সমিতির আয়-ব্যয় ও ব্যাংক স্টেটমেন্টের বিষয়েও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি শাহীনুর রহমান।

এব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সুনামগঞ্জের বিআরডিবি’র উপপরিচালক রাশিদুল মামুন চৌধুরী জানান, এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। তবে এবিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ